রবিবার দুপুরে তমলুক টাউন ক্রেডিট কো অপারেটিভের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল শহরের একাংশে। এদিন ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পর থেকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে আদর্শ আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলেন বিজেপির এক প্রার্থী। পালটা তৃণমূল প্রার্থী বিজেপি প্রার্থীর দিকে তেড়ে যান বলে অভিযোগ। এর জেরেই দুই পক্ষ ব্যাপক হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। এরপরেই বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।বিজেপির দাবি, ছোট্ট সমবায় নির্বাচন ঘিরে যেভাবে সন্ত্রাস ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে তা অত্যন্ত নক্কারজনক। যদিও তৃণমূলের দাবি, ভোটে অযথা উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি।এদিন তমলুক টাউন ক্রেডিট কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের ভোট গ্রহণ চলছিল তমলুকের শালগেছিয়া হাইস্কুলে। চাপা উত্তেজনার আবহে সকাল থেকেই ভোট শুরু হয়। বাইরে মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। এরই মধ্যে বিজেপির প্রার্থী সুরজিৎ বেরা তমলুকের দাপুটে তৃণমূল নেতা চঞ্চল খাঁড়া সহ তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে বুথের ভেতর গা জোয়ারির অভিযোগ তোলেন। সেই সঙ্গে তাঁদের বুথের বাইরে বের করে দেওয়ার আবেদন জানান। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে চঞ্চল খাঁড়া বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক ধ্বস্তাধস্তি হয়। এরপরেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ বাহিনী দ্রুততার সঙ্গে তাঁদের এলাকা থেকে সরিয়ে দেয়।বিজেপি প্রার্থী সুরজিৎ বেরার অভিযোগ, ‘এদিন ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার পর থেকে নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধিকে জলাঞ্জলি দিয়ে চঞ্চল খাঁড়া বারেবারে বাইরে থেকে ভেতরে যাচ্ছিলেন। তাঁর কাছে কোনও পরিচয়পত্রও ছিল না। দলবল নিয়ে বারেবারে বুথের ভেতর যাওয়া নিয়ে আমি প্রতিবাদ করতেই চঞ্চল খাঁড়া আমার ওপর চড়াও হন। সেই সঙ্গে বিজেপি কর্মীদেরও ধাক্কাধাক্কি করা হয়। তবে পুলিশ এসে দ্রুত সবাইকে সরিয়ে দিয়েছে।’ সুরজিতের দাবি, ‘ছোট্ট একটি সমবায় নির্বাচন জেতার জন্য তৃণমূল সর্বশক্তি নিয়ে দাদাগিরি চালাচ্ছিল। তারই প্রতিবাদ করায় আমাকে লাঞ্ছনা করা হল।’ তবে এই বিষয়ে চঞ্চল খাঁড়া কোনও মন্তব্য করতে চাননি। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, এই নির্বাচনে তৃণমূল বিপুল ভোটে জিততে চলেছে। তাই কোনও উপায়ান্তর না দেখেই অযথা ঝামেলা পাকানোর চেষ্টা চালিয়েছে বিজেপি প্রার্থী।প্রন্সঙ্গতঃ তমলুক টাউন ক্রেডিট কোঅপারেটিভ ব্যাঙ্কের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রথম থেকেই বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। প্রথমে এই ভোটে প্রার্থী দেওয়াকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল চরম আকার নেয়। চঞ্চল খাঁড়ার বিরুদ্ধে গায়ের জোরে প্রার্থীপদ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন তাম্রলিপ্ত পুরসভার তৃণমূলের এক কাউন্সিলার। তবে শেষ পর্যন্ত চঞ্চলের গোষ্ঠীর প্রার্থী তালিকাই মান্যতা পায়। এখানকার ৫৮টি আসনের মধ্যে ভোট হচ্ছে ২৭টি আসনে। সেখানেই আজ বিজেপি তৃণমূল হাতাহাতির ঘটনা ঘটল।