ওড়িশা বিজেপি সরকার জঙ্গল থেকে বাঘ ছেড়ে দিচ্ছে। আর সেই বাঘ ধরতে হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ বনবিভাগকে। মুখ্যমন্ত্রীর এই অভিযোগকে ‘বাজে কথা বলার’ বলে উল্লেখ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার সকালে নিজের বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথা বলেন শুভেন্দুবাবু। মুখ্যমন্ত্রীকে সংযত বক্তব্য রাখার অনুরোধ করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘এমন কিছু বলবেন না যাতে বাঙালি হিসাবে আমরা লজ্জিত হই।’এদিন শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘বাঘ কখনও ছেড়ে দেওয়া যায় না। মুখ্যমন্ত্রী মাঝেমাঝেই ফাউল টক করেন। কদিন আগে সন্দেশখালিতে গিয়ে সবাইকে বিধবা হতে বলেছেন। বলেছেন, যারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পান ৬০ বছর হয়ে গেলে বিধবা ভাতার জন্য কান্নাকাটি করতে হবে না। ৬০ বছর হয়ে গেলেই সব মহিলা বিধবা হবেন উনি জানলেন কী করে? এইরকম অনেক ফাউল টক করেন।’মমতাকে শুভেন্দু অধিকারীর পরামর্শ, ‘উনি তিনবার মুখ্যমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে বসেছেন। আমি ওনাকে বলব, আপনি কান দিয়ে দেখবেন না। চোখ দিয়ে দেখুন। আপনার কাছ থেকে মানুষ এই ধরণের কথা আশা করে না। আপনার অনেক বয়স হয়েছে। আপনি এই ধরণের কথা বললে লোকে হাসে। আমরা আপনার বিরোধী, কিন্তু আমরা পশ্চিমবঙ্গের নাগরিক। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে যদি ওড়িশা লোক খিল্লি করে যে আমরা বাঘ ছেড়ে দিচ্ছি, এটা পশ্চিমবঙ্গবাসী হিসাবে গায়ে লাগে। তাই মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, এমন কিছু বলবেন না যাতে বাঙালি হিসাবে আমরা লজ্জিত হই।’সোমবার গঙ্গাসাগরে সাগর মেলার প্রস্তুতি পরিদর্শনে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আবার একটা চলে এসেছে। তোমরা তো তোমাদের জঙ্গলের খেয়াল রাখবে। যাতে তোমাদের বাঘ আমাদের এখানে ঢুকে না পড়ে। এমনিতেই হাতির সংখ্যা আমাদের বেড়ে গিয়েছে। হাতির জন্মের হার অনেক বেশি। খাদ্য দিতেও সমস্যা। ধান খেতে ভালবাসে, চলে যাচ্ছে। রাস্তায় চলে এল। বনকর্মীদের সামলাতে হয়। ওড়িশা সরকারকে বলব, বাঘ উদ্ধার করে নিয়ে যেতে। এখন আবার যদি সেই আতঙ্ক সহ্য করতে হয়। তাহলে ছেড়ে দিন। আমরা সারাজীবন রেখে দেব।’তিনি বলেন, ‘বাঘকে পাঠালে চিরকালের জন্য পাঠান। আমরা রেখে দিচ্ছি। তোমাদের নিজেদের রাখার জায়গা নেই। নিয়ে গিয়ে জলে ছেড়ে দিলে। এটা কী হচ্ছে। আমি ওড়িশা সরকারকে দোষারোপ না করে বিশেষ অনুরোধ করব। দয়া করে বনকর্মী পাঠিয়ে বাঘকে ফেরত নিয়ে যান। শুধু আমাদের দোষারোপ করবেন না। আমাদের বাসিন্দারা আর ভোগান্তি সহ্য করবে না।’