সরকারি নিষেধাজ্ঞা উঠতেই দোল খেলতে সোনাঝুরিতে নামল মানুষের ঢল। রবীন্দ্রনাথের গান আর আবিরে বসন্ত উৎসবে মাতল আট থেকে আশি। শুক্রবার শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরির ছবিটা ছিল অন্য বছরের মতোই। তবে ছিল না শুধু মঞ্চ।সোনাঝুরিতে রং খেলায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে চলতি সপ্তাহের শুরুতে সেখানে ব্যানার দেখা যায়। বনদফতরের তরফে টাঙানো সেই ব্যানারে লেখা ছিল, ‘সোনাঝুরি সংরক্ষিত বনাঞ্চল। এখানে রং খেলা, গাড়ি রাখা, ভিডিয়োগ্রাফি ও ড্রোন ওড়ানো নিষিদ্ধ। সরকারি এই ফতোয়া নিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় সাধারণ মানুষের মধ্যে। কারণ ২০১৯ সাল থেকে বিশ্বভারতীতে বন্ধ রং খেলা। দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে মানুষ জড়ো হয় সোনাঝুরিতে। এবার সেখানেও বসন্ত উৎসবে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় কার্যত মুষড়ে পড়েছিলেন তাঁরা। বিপাকে পড়েছিলেন শান্তিনিকেতনের হোটেল মালিকরাও। কারণ দোলে শান্তিনিকেতনে আসার পরিকল্পনা করে অনেকে অনেক আগে থেকে হোটেল বুক করে রাখেন। সোনাঝুরিতে বসন্ত উৎসবে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় তারা হোটেল মালিকদের ফোন করে বুকিং বাতিল করতে অনুরোধ করতে থাকেন।ওদিকে এই ইস্যুতে সুর চড়ায় বিজেপি। তাদের দাবি, দূষণের নাম করে হিন্দুদের অনুষ্ঠানে হস্তক্ষেপ করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এমনকী এবার দোল শুক্রবার পড়েছে বলে পুলিশের তরফে ১০টার মধ্যে রং খেলা শেষ করতে বলা হয়েছে বলেও দাবি করতে থাকে তারা।এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎ বদলে যায় পরিস্থিতি। বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা বলেন, সোনাঝুরিতে রং খেলায় কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। দ ওদিকে বীরভূম পুলিশের তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানানো হয়, রং খেলার জন্য কোনও সময়সীমা বেঁধে দেয়নি পুলিশ। এর পর সোনাঝুরিতে গিয়ে দেখা যায় সেখানে বন দফতরের টাঙানো ব্যানারগুলি কেউ বা কারা খুলে নিয়ে গিয়েছে।শুক্রবার সকাল থেকেই সোনাঝুরিতে শাল - ইউক্যালিপটাস বনে ধীরে ধীরে জড়ো হতে থাকেন সাধারণ মানুষ। হলুদ বা সাদা পোশাকে আবির খেলায় মেতে ওঠেন তাঁরা। রবীন্দ্রনাথের গানের তালে পা মেলাতে দেখা যায় অনেকে।