মাটিগাড়া নাবালিকা ছাত্রী খুনের ঘটনা কার্যত নাড়িয়ে দিয়েছে দার্জিলিংকে। ইতিমধ্যে বিজেপির পাশাপাশি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলিও রাস্তায় নামতে শুরু করেছে। শুক্রবার শিলিগুড়ির বিভিন্ন জায়গায় বনধ পালিত হয়েছিল। মাটিগাড়ায় চা বাগানের শ্রমিকরাও সেই বনধের কর্মসূচিতে সামিল হয়েছিল। তাদের বিক্ষোভ সামাল দিতে রীতিমতো হিমসিম খায় পুলিশ। এদিকে শনিবার পাহাড়ে বনধ পালিত হয়েছে। ব্যপক সাড়া পড়ে বনধে।গোটা ঘটনায় কী বলছেন শিলিগুড়ির বিশিষ্টজনেরা? কী ভাবছে পাহাড়?দার্জিলিং লিগাল এইড ফোরামের সভাপতি অমিত সরকার হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে জানিয়েছেন, খুব দ্রুত এর তদন্ত করা দরকার। আমরা মেয়েটির বাড়িতে গিয়েছিলাম। গোটা পরিবার ভেঙে পড়েছে। আমরা চাইছি ফাঁসি হোক। লিগাল এইড ফোরামের তরফে আমরা এই দাবি করছি। এই ঘটনা মানতে পারছি না। স্কুল ইউনিফর্ম পরা কোনও ছাত্রীর সঙ্গে এই ঘটনা কেউ করতে পারে?শিলিগুড়ির বরদাকান্ত বিদ্যাপীঠের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তমাল চন্দ হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে জানিয়েছেন, অত্যন্ত উদ্বেগের ঘটনা। আমরা বলছি স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের কাউন্সেলিং করানোটাও খুব দরকার। আমরা চাইছি দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক দোষীর।শিলিগুড়ি গার্জিয়ান ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক সন্দীপন ভট্টাচার্য HT Bangla-কে জানিয়েছেন, আমরা উদ্বিগ্ন। ওই অভিযুক্তের ফাঁসি বা যেটাই হোক কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে এই বিষ ছড়িয়ে পড়বে শিলিগুড়ি শহরে। আরও ছাত্রীকে এর বলি হতে হবে।এক কলেজ শিক্ষিকা জানিয়েছেন, এই ঘটনা কোনওভাবেই মানতে পারছি না। ফুলের মতো ছাত্রীকে এভাবে হারিয়ে যেতে হল। সবথেকে বড় কথা সে স্কুল ইউনিফর্মে ছিল।সাংসদ রাজু বিস্তা, বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ এদিন এই বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেন। এদিন রাজু বিস্তা ওই মৃত ছাত্রীর বাড়িতেও গিয়েছিলেন। বিজেপি নেতৃত্ব, হিন্দুত্ববাদী সংগঠন তাঁদের মতো করে আন্দোলন শুরু করেছে।শিলিগুড়িতে ছাত্রী হত্যার প্রতিবাদে আমাদের মিছিল। আমি বাংলার মেয়ে আমিও বাঁচতে চাই। মণিপুরের ঘটনা হলে মুখ্যমন্ত্রী ছুটে যান। আর শিলিগুড়িতে একজন হিন্দু ছাত্রী, গোর্খা মেয়েকে থেঁতলে মারা হয়েছে। আমি বিধানসভায় যখন বলতে গিয়েছি আমার মাইক বন্ধ করে দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে জনস্রোত আছড়ে পড়েছে। অপদার্থ হিন্দু বিরোধী প্রশাসনের বিরুদ্ধে।রাজু বিস্ত বলেন, হিন্দুর মেয়ে মারা গিয়েছে। কেন চুপ মমতা দিদি? যে অপরাধী তাকে ভগবানও ছাড়ে না। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসন তাকে ছেড়ে দিচ্ছে।প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেব জানিয়েছেন, মানুষের ক্ষোভ থাকবেই। কিন্তু বনধ ছাড়া অন্যভাবে কিছু করুন। এভাবে বনধের রাজনীতি করবেন না।এদিকে শিলিগুড়ি পুলিশের স্পেশাল ইনভেসটিগেশন টিম অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতের নাম মহম্মদ আব্বাস। সে মাটিগাড়ার লেনিন কলোনি এলাকার বাসিন্দা। ধর্ষণে বাধা দেওয়ার জেরেই সে ছাত্রীকে খুন করেছে বলে অভিযোগ।