রেল শহর হিসেবে পরিচিত কাঁচরাপাড়া। এই শহরের সিংহভাগই জমি রেলের অধীনে। দীর্ঘদিন ধরেই রেলের জায়গায় থাকা জঞ্জাল সাফাই করে আসছে কাঁচরাপাড়া পুরসভা । অথচ তারজন্য পুরসভাকে সার্ভিস ট্যাক্স বা পরিষেবা কর দেয় না রেল। যারফলে কয়েক কোটি টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে। এই দাবি জানিয়ে এবার সার্ভিস ট্যাক্স চেয়ে রেলকে চিঠি দিল কাঁচরাপাড়া পুরসভা। দাবি করা হয়েছে, ১৯৮৩-৮৪ সাল থেকে ২০২৪-২৫ সাল পর্যন্ত ১৪ কোটি ৪১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৯৪১ টাকা সার্ভিস ট্যাক্স বাবদ বকেয়া রয়েছে। সেই বিল রেলকে পাঠিয়েছে কাঁচরাপাড়া পুরসভা।
আরও পড়ুন: ট্রেনে মোবাইল-ল্যাপটপ হারিয়েছে? খুঁজে দিতে নয়া উদ্যোগ রেলের, কোথায় জানাতে হবে?
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই শহরের ৭০ শতাংশ জমি রেলের অধীনে রয়েছে। সেখানে রেলের ওয়ার্কশপ, স্টেশন, কোয়ার্টার, হাসপাতাল প্রকৃতি রয়েছে। এই সব জায়গায় পড়ে থাকা জঞ্জাল পরিষ্কার করতে হয় পুরসভাকে। এছাড়াও অন্যান্য পরিষেবা দিতে হয়। তারপরেও ২০১৩ সালের পর থেকে রেলের তরফে আর কোনও ট্যাক্স দেওয়া হয়নি। তাই বকেয়া সার্ভিস ট্যাক্স দাবি করে সাম্প্রতি রেলকে চিঠি পাঠিয়েছেন কাঁচরাপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান কমল অধিকারী।
শিয়ালদা ডিআরএমকে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি তিনি রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে চিঠির প্রতিলিপি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে পুরসভার আর্থিক সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, এমনিতেই সিংহভাগ জায়গা রেলের অধীনে থাকায় এই পুরসভায় সম্পত্তি কর কম। তাছাড়া পঞ্চদশ কমিশনের অর্থ পায় না পুরসভা। তাই রেলের কাছ থেকে সার্ভিস ট্যাক্স চাওয়া হয়েছে। এই চিঠির পর রেলের তরফে পুরসভাকে নির্দিষ্ট ওয়ার্ড ও প্রেমিসেস নম্বর এবং রাস্তার নাম উল্লেখ করে নতুন বিল পাঠাতে বলা হয়।তারপর পুরসভার চেয়ারম্যান ফের রেলকে চিঠি দিয়ে ওয়ার্ড নম্বর ধরে ধরে সার্ভিস ট্যাক্স দাবি করেছেন। হাসপাতাল, কোয়ার্টার, স্টেডিয়াম, ক্ষুদিরাম বোস ইনস্টিটিউট, কাজি নজরুল ইনস্টিটিউট, রেল ইনস্টিটিউট প্রভৃতি জায়গার জন্য সার্ভিস চার্জ করা হয়েছে। এবিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের কথা উল্লেখ করেছে পুরসভা।
পুর চেয়ারম্যান কমল অধিকারী জানান, ২০১৩ সালে সামান্য টাকা দিয়ে রেল জানিয়েছিল আর দিতে পারবে না। তাছাড়া, রেলের পড়ে থাকা জায়গা লিজ নিয়ে উন্নয়নমূলক কাজ করতে চেয়েছিল পুরসভা। তাতেও কোনও সাড়া মেলেনি। এবিষয়ে পূর্ব রেলের তরফে বলা হয়েছে, স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্ব পরিষেবা দেওয়া। রেলের পক্ষ থেকে এই ধরনের সার্ভিস ট্যাক্স দেওয়ার কোনও গাইডলাইন নেই।