কালিম্পংয়ের মাটিতে আপেল চাষ। বেড়াতে গেলে এবার দেখে আসতে ভুলবেন না। ইতিমধ্যেই কালিম্পংয়ে পরীক্ষামূলকভাবে আপেল চাষ হয়েছে। তাতে ভালোই সফল হয়েছেন কৃষকরা। ইতিমধ্যেই প্রায় ২ কুইন্টাল গোল্ডেন ভ্যারাইটির আপেল চাষ করা হয়েছে। এবার সেই আপেলের উৎপাদনকে আরও বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছেন কৃষকরা। সব মিলিয়ে পাহাড়ের মাটিতে আপেল চাষ একবার বাণিজ্যিকভাবে সফল হলে গোটা ছবিটাই বদলে যেতে পারে।কালিম্পংয়ের অত্যন্ত সুন্দর ও কৃষিপ্রধান গ্রাম ফিক্কালে। সেখানেই ২০১৮ সালে প্রথম আপেল চাষে নামেন আনন্দ কুমার ছেত্রী নামে এক কৃষক। মূলত পর্যটকদের কাছে তিনি সেই আপেল বিক্রি করেন। সব মিলিয়ে ২৫ হাজার টাকার বেশি লাভ করেছিলেন তিনি। তারপর আর থেমে থাকেননি। তিনি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে আমি ৬০টি আপেল চারা পুঁতেছিলাম। গাছগুলিতে ফল আসতে বছর দুয়েক সময় লেগে গেল।তবে আনন্দ কুমার শুধু একলা নন, অনেকেই এখন এই এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে আপেল চাষে নেমেছেন। এবার বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে তারা আপেল উৎপাদন করতে চাইছেন। আসলে দার্জিলিংয়ের কমলালেবুর জগৎজোড়া নাম। কিন্তু অনেকেই দার্জিলিংয়ের আপেলের কথা শোনেননি। তবে এবার কালিম্পং জাতের আপেল বলে আলাদা করে নাম করতে চাইছেন কৃষকরা।আনন্দ কুমার জানিয়েছেন, আরও অনেক কৃষকের এখন আপেল চাষে এগিয়ে আসা দরকার। এতে কালিম্পংকে আপেল চাষের ক্ষেত্র হিসাবে তুলে ধরা যাবে।এদিকে কমলালেবু দেখার জন্য দলে দলে পর্যটকরা দার্জিলিংয়ে আসেন। সিটংয়ে আসেন। কিন্তু কালিম্পংয়ের ফিক্কালেতে যদি আপেল চাষ প্রসার লাভ করে তবে আপেলের টানেও অনেকে ঘুরতে আসতে চাইবেন কালিম্পংয়ের ফিক্কালে গাঁওতে।স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০১৮-১৯ সালে কালিম্পং-২ এর তৎকালীন বিডিও সুবর্ণ মজুমদার আপেল চারা রোপন করা শুরু করেন। প্রায় ২৫০০ আপেল চারা রোপন করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।এরপর কাশিয়ং, সাকিয়ং, কাগায়, সাংসায়, লিংসে, লোলে, পেডং সহ বিভিন্ন এলাকায় আপেল চাষ প্রসার লাভ করতে থাকে। দেখা যাচ্ছে রিশপ, পেডং এলাকায় আপেলের ফলন ভালোই হচ্ছে। রিশপে দাওয়া শেরপা নামে এক কৃষক একটা গাছে অন্তত ৩০-৪০ কেজি আপেল ফলিয়ে ফেলেছেন।তবে সবটাই যে সফলতার কাহিনি এমনটা নয়। আপেল পাকলে পোকা আর পাখির উৎপাত হয়। আপেল চাষে অনেকেই অভিজ্ঞ নন। হোম স্টের উদ্যোগেও আপেল চারা বিতরণ করা হয়েছে। হিমাচল প্রদেশ থেকে চারা এনে পোঁতা হয়েছে কালিম্পংয়ে। বাজারে কালিম্পংয়ের আপেলের দাম ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা যেতেই পারে।