বাড়ির সদস্যদের মিথ্যে কথা বলে তরুণী–যুবতীরা প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে যাচ্ছেন বলে প্রায়ই খবর সামনে আসে। এই তালিকায় বহু নাবালিকাও আছে বলে তথ্য উঠে এসেছে। স্মার্টফোন ব্যবহার যত বেড়েছে তত এমন ঘটনা ঘটে চলেছে। নাবালিকারাও এখন দেদার স্মার্টফোন ব্যবহার করছেন। আর তার জেরেই নাবালিকাদের মধ্যে নিখোঁজ হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। গত এক বছরে হুগলি জেলা থেকে ৮০০ নাবালিকা নিখোঁজ হয়েছে বলে তথ্য তুলে ধরলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার। এই খবর এখন প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক হইচই পড়ে গিয়েছে। এমনকী অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
এই হুগলি জেলায় কয়েক মাসে শতাধিক নাবালিকার নিখোঁজ হয়েছে। বিশেষ করে স্কুলপড়ুয়া কিশোরীদের বাল্যবিবাহের ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। এই গোটা বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। অর্চনা মজুমদার বলেন, ‘দেশে বাল্যবিবাহের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। আমাদের রাজ্যে হুগলি জেলায় এই প্রবণতা উদ্বেগজনক।’ এই অবস্থা ঠেকাতে আজ, সোমবার চুঁচুড়ায় সার্কিট হাউজে হুগলি জেলা প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন অর্চনা দেবী। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যা অর্চনা মজুমদার, হুগলির অতিরিক্ত জেলাশাসক (ডেভেলপমেন্ট), হুগলি গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সরকার এবং প্রশাসনিক অফিসাররা।
আরও পড়ুন: ‘ইফতারে যোগ দিলে প্রশ্ন উঠছে কেন?’ ফুরফুরা শরিফ থেকে সম্প্রীতির দিলেন মমতা
হুগলিতেই যদি এই পরিস্থিতি হয় তাহলে অন্যান্য জেলায় এমন ঘটনা নিশ্চয়ই আছে। অবিলম্বে এই পরিস্থিতি কমিয়ে আনতে হবে। তার জন্য চাই সক্রিয় সহযোগিতা। এই বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অর্চনা মজুমদারের বক্তব্য, ‘হুগলি জেলার গ্রামীণ অঞ্চলে নাবালিকাদের নিখোঁজ হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। এটা উদ্বেগজনক। দেখা যাচ্ছে স্মার্টফোনের ব্যবহারের জেরে নাবালিকা নিখোঁজ হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। তাই অভিভাবকদের আরও কঠোর হতে হবে। বাচ্চারা ফোনে কী দেখছে সেদিকে নজর রাখা দরকার। বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে নাবালিকারা হোমে থাকে। আর এবার অভিভাবকদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে। পুলিশকে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। দরকারে অভিভাবকদের জেল হতে পারে।’
হুগলি জেলার নানা জায়গায় এই সমস্যা দেখা দিলেও আরামবাগ মহকুমায় স্কুলপড়ুয়া মেয়েদের বাল্যবিবাহের প্রবণতা বেড়ে গিয়েছে। তাই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচেতনতা শিবির আয়োজন করা হচ্ছে। স্কুলেও বিশেষ পাঠ্যক্রম চালু করার উপর নজর দিতে হবে। জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদারের কথায়, ‘এক বছরে হুগলি জেলায় ৮০০’র বেশি নাবালিকা নিখোঁজ হয়েছে। এটা চিন্তার বিষয়। এই ঘটনা প্রতিরোধে প্রশাসনকে আরও কঠোর পদক্ষেপ করতে হবে।’ এই নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর বহু নাবালিকা বিপদে পড়ে। তাদের ভিন রাজ্যে বিক্রি করে দেওয়া হয়।