কয়লা চুরিও করা হবে, আবার সিআইএসএফ কিংবা ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেড (ইসিএল)-এর নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীরা তা আটকাতে এলে পালটা হামলাও করা হবে, তা সত্ত্বেও চোরেদের উপর কোনও কঠোর পদক্ষেপ করা যাবে না! এভাবেই 'এক ঢিলে তিন পাখি' মারার কৌশল নিতে ছোট ছোট শিশু ও নাবালক-নাবালিকাদের অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে কয়লাচোর ও পাচারকারীরা।ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের অন্তর্গত জামুড়িয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। সংবাদমাধ্যমে উঠে আসা তথ্য অনুসারে - সেই অভিযোগ দায়ের করেন ইসিএল-এর পূর্ব সিয়ারসোল খোলামুখ খনি কোলিয়ারির ম্যানেজার যশবন্ত কুমার অতুলকর।সেই অভিযোগে জনানো হয়েছে, নিরাপত্তার ঘেরাটোপ থাকা সত্ত্বেও ইদানীংকালে ওই খনিতে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দেদার কয়লাচুরি চলছে। এবং সেই চুরিতে কাজে লাগানো হচ্ছে মূলত মহিলা ও শিশুদের। ফলত, চোখের সামনে চুরি দেখেও পালটা কিছু করতে পারছেন না নিরাপত্তারক্ষীরা। কারণ, তাঁরা বাধা দিতে গেলেই মহিলা কয়লাচোররা ওই শিশুদের নিয়ে হামলা চালাচ্ছে তাঁদের উপর! এমনকী, সংস্থার বহুমূল্য নানা যন্ত্রপাতি ভেঙে নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে।আরও জানানো হয়েছে, রাত গভীর হলেই প্রচুর সংখ্যায় মোটরবাইক এসে জড়ো হচ্ছে খোলামুখ খনির সামনে। সেইসব মোটরবাইকের পিছনের অংশে শক্তপোক্ত লোহার ক্যারিয়ার বানানো হয়েছে। মহিলা ও শিশুরা যে কয়লা চুরি করছে, সেই কয়লাই ওই মোটরবাইকে তুলে পাচার করা হচ্ছে। এই কাজে খুব অল্প সংখ্যায় পুরুষদের ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রত্যেকটি মোটরবাইকে অন্তত ৪ থেকে ৫ টন করে কয়লা পাচার করা হচ্ছে!বিষয়টি ক্রমশ হাতের বাইরে চলে যাওয়ায় পুলিশের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হয়েছে ইসিএল কর্তৃপক্ষ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তারা অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।সবথেকে চিন্তার বিষয় হল, কয়লাচুরি ও তা পাচারচক্রে শিশু-কিশোরদের জুড়ে দেওয়া! তথ্য বলছে, এই বচ্চারা অধিকাংশই স্কুলছুট! তারা পড়াশোনা করছে না। বদলে একেবারে শিশু বয়স থেকেই এই ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। বলা ভালো, তাদের জড়িয়ে দেওয় হচ্ছে এবং এই প্রবণতা দিন-দিন ক্রমশ বাড়ছে। যা ভয়ঙ্কর বলেই মত সংশ্লিষ্ট মহলের।