বাংলায় গনি মিথ বজায় থাকলেও অধীর গড় তছনছ হয়েছে তৃণমূলের সবুজ ঝড়ে। বহরমপুরে প্রথমবার হারতে হল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে। আর এরপরই অধীরের আক্ষেপ, তিনি হেরেছেন জাতপাত ও মেরুকরণের রাজনীতির কাছে। ২০১৯ সালেও ৮০ হাজার ভোটে বহরমপুরে জয়ী হয়েছিলেন অধীর। এরপর লোকসভায় বিরোধী দলনেতা ও সংসদে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। তবে ২০২৪ সালে নিজের গড়ে ইউসুফ পাঠানের মতো নবাগত রাজনীতিবিদের কাছে হারতে হয়েছে 'রবিনহুড'কে। এরপরই অধীর দাবি করলেন, বাংলার রাজনীতি থেকে ধর্মমিনরপেক্ষতা হারাচ্ছে। ঢুকে পড়ছে মেরুকরণের সমীকরণ। এই আবহে অধীরের দাবি, বাংলায় ধর্মনিরপেক্ষদের জন্য নির্বাচনী লড়াই কঠিন হচ্ছে। (আরও পড়ুন: আজ ভাঙা হবে ১৭তম লোকসভা, নয়া সরকার গঠনের অঙ্ক মেলাতে বৈঠক বুধেই, মোদীর শপথ কবে?)
আরও পড়ুন: ভোটের হারে মাত্র ০.৭% হ্রাস, তাতেই এবার বিজেপির লোকসভা আসন কমল ৬৩!
আরও পড়ুন: একদিনেই 'হাওয়া' ৪৫ বিলিয়ন ডলার, হিন্ডেনবার্গের পরও এত পড়েনি আদানির শেয়ার!
হেরে যাওয়ার পরে সংবাদমাধ্যমের কাছে অধীর ভোটে কারচুপির কোনও অভিযোগ করেননি। বরং তিনি বলেন, ভোট ভালোই হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, 'জেতার জন্য কংগ্রেস এখানে কোনও ত্রুটি করেনি। তবে মানুষ মনে করেছে পরপর পাঁচবার জেতানোর পর এবার আর দরকার নেই। হেরে গিয়েছি। এর আগে মানুষ অনেক আশীর্বাদ ও দোয়া দিয়েছে। ইউসুফ পাঠানকে জয়ের শুভেচ্ছা। তবে আমি স্যান্ডউইচ হয়েছি। এখানে হিন্দু ভোট ভাগ হয়েছে। মুসলিম ভোটও ভাগ হয়েছে। আমি না হিন্দু হতে পেরেছি, না মুসলিম।' এদিকে দেশে কংগ্রেসের সার্বিক ফলাফল নিয়ে অধীর বলেন, 'রাহুল গান্ধী প্রমাণ করেছেন যে পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই।' (আরও পড়ুন: সরকার গড়বে বিজেপিই, তবে লোকসভার ফলে দেখা গেল কোন ৭ 'চমকপ্রদ সমীকরণ')
এদিকে অধীরকে বারবারই 'বিজেপির এজেন্ট' বলে কটাক্ষ করে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলেও অধীরের হার নিয়ে খোঁচা দেন মমতা। বলেন, 'ওঁর ঔদ্ধত্যই এর জন্য দায়ী। আর উনি বিজেপির লোক। পাঠানকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। ওঁকে আমরা আমন্ত্রণ করেছিলাম। উনি সেটা গ্রহণ করে মর্যাদা দিয়েছেন।' মমতা বলেন, 'আমি কংগ্রেসকে ২টো আসন দিতে চেয়েছিলাম। ওদের কোনও বিধায়ক নেই। তবে সেই ২টো আসনে তারা জিতে যেত। কিন্তু ওরা কথা শোনেনি।' (আরও পড়ুন: ভারতের নির্বাচনের প্রশংসায় আমেরিকা, বিজেপি 'পিছিয়ে পড়ায়' কী বলল ওয়াশিংটন?)
আরও পড়ুন: শুধু স্মৃতি নন, UP-তে ধরাশায়ী আরও ৬ মন্ত্রী, জয়ের ব্যবধান কমল মোদী-রাজনাথের
উল্লেখ্য, এর আগে গত ৫ বার অধীর কখনও সংখ্যালঘু (মূল) প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ভোট যুদ্ধে নামেননি বহরমপুরে। এই আবহে জনপ্রিয় ক্রিকেটার তথা সংখ্যালঘু প্রার্থী দাঁড় করিয়ে বাজিমাত করেছে তৃণমূল। অপরদিকে বিজেপির তরফ থেকে জনপ্রিয় চিকিৎসককে প্রার্থী করা হয়েছিল। এর ফলে অধীরের জন্য ভোট সমীকরণ কঠিন হয়েছিল। এদিকে গত লোকসভা নির্বাচনে যে বহরমপুর বিধানসভা এলাকায় অধীর ৮৯ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন, সেখানেই ২০২১ সালে কংগ্রেস হেরেছিল ৫০ হাজার ভোটে। এই আবহে নিজের গড়েই চিড় ধরেছিল অধীরের। এই আবহে 'রবিনহুড'কে হারতে হল এই প্রথম।