বেআইনিভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে বিএসএফের হাতে ধরা পড়ল ৪ বাংলাদেশি। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরে। ধৃতদের আটক করে জেরা করে বিএসএফ। পরে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশও জিজ্ঞাসাবাদ চালায়। জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে জঙ্গল দিয়ে ভারতে ঢুকেছিল এই ৪ বাংলাদেশি। ধৃত চারজন অভিযুক্ত হলেন মহম্মদ ইয়াকুব হোসেন, ফরহাদ হোসেন, মহম্মদ কামরুল ইসলাম টাঙাইল ও মণির হোসেন। এদের মধ্যে ইয়াকুব ও ফরহাদ মাদারীপুর ও কামরুল আর মণির ঢাকার বাসিন্দা। ধৃতদের বসিরহাট মহকুমা আদালতে পেশ করে পুলিশ। (আরও পড়ুন: 'জয় বাংলা' বাতিল করা নাহিদদের দলের স্লোগান 'ধার' করা হল ভারত থেকেই!)
আরও পড়ুন: হাইওয়ের পাশে পড়ে থাকা সুটকেস থেকে মিলল বছর ২২-এর কংগ্রেস মহিলা কর্মীর দেহ
এদিকে সম্প্রতি বাংলাদেশিদের ভারতে অনুপ্রবেশ এবং 'সীমান্ত হত্যা' নিয়ে মুখ খুলেছিলেন বিজিবি প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকি। সম্প্রতি ত্রিপুরায় প্রায় ২০ জন বাংলাদেশি পাচারকারী অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে রবার বুলেট ছুড়েছিল বিএসএফ। তাতে এক পাচারকারীর মৃত্যু হয়েছিল। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিজিবি প্রধান বলেন, 'সীমান্ত হত্যা নিয়ে আলোচনা হয় দিল্লিতে। বাংলাদেশিরা যাতে ভারতে অনুপ্রবেশ না করে, তার জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা করছি আমরা। তবে আমরা দেখতে পেয়েছি (ত্রিপুরার সিপাহিজালা) ১৫-২০ জন অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করছিল। তখন বিএসএফ বাধা দেওয়ার পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাত হয়। সেই সংঘাতে বিএসএফ রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে এক যুবকের পেটে লাগে। সেই যুবককে নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে অপারেশন করিয়েছিল। তবে সে বাঁচেনি। এ ঘটনায় একজন বিএসএফ সদস্য আহত হয়েছেন। তিনি হাসপাতালে আছেন।' এরপরও তিনি বলেন, 'অবৈধ অনুপ্রবেশ হোক আর যা-ই হোক, হত্যা কোনও সমাধান নয়। এপর আর একটি হত্যাও যদি হয়, তাহলে আমরা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করব।' (আরও পড়ুন: এই প্রথম কৃষ্ণনগর ও বহরমপুরের সঙ্গে সরাসরি রেলপথে জুড়ছে উত্তরবঙ্গ)
আরও পড়ুন: '...হিন্দু মেয়েদের প্রতি অনেক মুসলমান ছেলের অস্বাভাবিক আকর্ষণের কারণ বোঝা যাবে'
এদিকে বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিএসএফ কাঁটাতারের বেড়া দিতে গেলে তাতে আপত্তি জানাচ্ছে বিজিবি। অপরদিকে অনুপ্রবেশকারী বা পাচারকারীদের গুলি করলে তাতেও আপত্তি ওপারের শাসক গোষ্ঠীর। প্রসঙ্গত, বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়া নিয়ে সংঘাত দেখা গিয়েছে বিএসএফ এবং বিজিবির মধ্যে। এই আবহে মালদা সহ একধিক জায়গায় ভারতীয় ভূখণ্ডের কাঁটাতার দিতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ছে বিএসএফ। এর জেরে সীমান্তের বহু জায়গায় ছড়িয়েছে উত্তেজনা। এই ইস্যুতে বাংলাদেশের দাবি, ১৯৭৫ সালে যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত চুকি দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল, তা অনুযায়ী, সীমান্তের জিরো পয়েন্ট থেকে ১৫০ গজ ভিতরে 'প্রতিরক্ষা কাঠামো' তৈরি করা যাবে। এদিকে ২০১০ সালে অবশ্য বাংলাদেশ ভারতকে লিখিত আকারে অনুমতি দিয়েছিল যে সীমান্তে ১৫০ গজের ভিতরেও প্রয়োজনে কাঁটাতারের বেড়া দিতে পারবে ভারত। এই কথা নিজে স্বীকার করেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী। এখন বাংলাদেশের গদিতে 'মুখ' পরিবর্তনের পরে তাদের অভ্যন্তরীণ সমীকরণ যাই হয়ে থাকুক না কেন, আগের সরকারের স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক আন্তর্জাতিক চুক্তি মানতে বাধ্য তারা।