জগন্নাথদেবের রথযাত্রা চলেই এল। আর এই পবিত্র তিথিতে সারা পুরী জুড়ে নেমেছে ভক্তের ঢল। পুরীর জগন্নাথধাম নিয়ে একাধিক কাহিনি ও রহস্য প্রচলিত। তার মধ্যে অন্যতম হল এই মন্দিরের বাইশটি সিঁড়ি। জগন্নাথধামের সিংহদ্বারে রয়েছে বাইশটি সিঁড়ি। প্রতিটি সিঁড়িই নানাভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। ওড়িয়া ভাষায় বাইশটি সিঁড়িকে বাইশ পহুছা বলা হয়। বাইশটি যোগদর্শনমনে করা হয় এই বাইশটি সিঁড়ি আসলে বাইশটি যোগদর্শনের প্রতীক। এই যোগদর্শন আমাদের জীবনের সঙ্গে নানাভাবে সম্পৃক্ত বা জড়িত। কী কী সেই যোগদর্শন? ধাপে ধাপে চিনে নেওয়া যাক। বাইশটি সিঁড়ির প্রথম পাঁচটি আমাদের পঞ্চ ইন্দ্রিয় নিয়ে তৈরি। এই পাঁচটি ইন্দ্রিয় হল চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা, চর্ম। পরের পাঁচটি সিঁড়ি আমাদের প্রাণের পাঁচটি ধর্মের প্রতীক। এই পাঁচটি সিঁড়ি হল রূপ, রস, গন্ধ, শব্দ ও স্পর্শ। এর পরের পাঁচটি সিড়ি পৃথিবী নির্মাণের পাঁচটি উপাদানকে নির্দেশ করে। এই পাঁচটি উপাদান হল ক্ষিতি অপ তেজ, মরুৎ ও ব্যোম। এর পরের সিড়িগুলি নির্দেশ করে আমাদের জাগতিক ইন্দ্রিয়দুর্বলতাকে। এগুলি হল কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ, মাৎসর্য। শেষ সিঁড়ি হল বুদ্ধির প্রতীক।আরও পড়ুন - পিতৃতীর্থ এই বাইশ সিঁড়িতবে শুধুই যে বাইশটি যোগদর্শনের কথা বলে এই সিঁড়ি, তা কিন্তু নয়। সিঁড়িগুলিকে পিতৃতীর্থ বলেও মনে করা হয়। কারণ এই সিঁড়িতে পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করা যায়।চতুর্দশ ভুবন ও অষ্ট বৈকুণ্ঠহিরণ্যগর্ভ পদ্মাসনে প্রভুর আসন। মনে করা হয়, এই বাইশটি সিঁড়ির আরেক অর্থ হল চতুর্দশ ভুবন ও অষ্ট বৈকুণ্ঠ। এই চৌদ্দটি ভুবন ও অষ্ট বৈকুণ্ঠ পেরিয়ে তবেই পৌঁছানো যায় ভগবানের কাছে। তাই পেরোতে হয় এই বাইশটি সিঁড়ি। আরও পড়ুন - জৈনধর্মের বাইশ তীর্থঙ্করজৈনধর্মের বাইশ তীর্থঙ্করের সঙ্গেও তুলনা করা হয়ে থাকে এই বাইশ জনের। মনে করা হয়, এই বাইশটি সিঁড়ি আদতে জৈনধর্মের বাইশজন তীর্থঙ্করকে নির্দেশ করে। বলা হয়, এদের স্পর্শ রীতিনীতি বুঝতে হলে পৌঁছাতে হবে আদি তীর্থঙ্কর ঋষভনাথের।