সন্ধি পুজোয় ১০৮ টা পদ্ম ফুল, যে কোনও পুজোর ক্ষেত্রে ১০৮ টি ফুলের মালা, ১০৮ টা বেল পাতা কিংবা ১০৮ বার মন্ত্র জপের কথা তো প্রায়শই শোনা যায় যায়। কিন্তু জানেন কি ১০৮ এই সংখ্যাটির মধ্যে কী বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে? কেন এই সংখ্যাকে এত শুভ মনে করা হয়?
প্রতীকী ছবি
সন্ধি পুজোয় ১০৮ টা পদ্ম ফুল থেকে শুরু করে নানা পুজোয় ১০৮ টি ফুলের মালা, ১০৮ টি বেল পাতা কিংবা ১০৮ বার মন্ত্র জপের কথা তো প্রায়শই শোনা যায়। কিন্তু জানেন কি ১০৮ এই সংখ্যাটির মধ্যে কী বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে? কেন এই সংখ্যাকে এত শুভ মনে করা হয়? আসলে অনেক আধ্যাত্মিক উপাচার থেকে শুরু করে মন্ত্রপাঠ সব কিছুতেই ১০৮ এই সংখ্যার বিশেষ মাহাত্ম রয়েছে। এই সংখ্যার গভীর আধ্যাত্মিক এবং ব্যবহারিক উপকারিতা রয়েছে।
হিন্দু এবং বৌদ্ধ ধর্মে ১০৮ এই সংখ্যাটিকে খুব পবিত্র হিসাবে গণ্য করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে, এটি এমন একটি সংখ্যা যা মহাবিশ্ব এবং আধ্যাত্মিকতার মেলবন্ধন ঘটায়। '১' এই সংখ্যাটি একতা বা ঈশ্বরের উৎসের প্রতীক, '০' এই সংখ্যাটি আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের প্রতিনিধিত্ব করে এবং '৮' অসীম বা জীবনের অন্তহীন চক্রকে নির্দেশ করে। একসঙ্গে এই ১০৮ সংখ্যাটি মহাজাগতিক ঐক্য এবং অন্তরের ঐশ্বরিক চেতনার প্রতিনিধিত্ব করে।
একটি মন্ত্র ১০৮ বার উচ্চারণ করলে একটি নির্দিষ্ট শব্দ তরঙ্গ তৈরি হয় যা মহাবিশ্বের শক্তির সঙ্গে মেলবন্ধন ঘটায়। শব্দ তরঙ্গ আভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক ভাবে অনুরণনের সৃষ্টি করে। বিশ্বাস করা হয় এই ধরনের অনুরণন আধ্যাত্মিক শক্তি বাড়াতে পারে এবং ধ্যানে সাহায্য করতে পারে, এটি চেতনার উচ্চতর অবস্থার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করাকে আরও সহজ করে তুলতে পারে।
১০৮ বার একটি মন্ত্রের পুনরাবৃত্তি মনকে একাগ্র করতে সাহায্য করে। বিক্ষিপ্ত মনকে এক জায়গায় এনে শান্ত করতে সহায়তা করে। প্রতিদিন যাঁরা অনুশীলন করেন, তাঁরা ধ্যানের অভ্যাসও করতে পারেন এর সাহায্যে। ১০৮ বার জপ করার অভ্যাস উদ্দেশ্যকে দৃঢ় করে এবং আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতাকে গভীর করতে সহায়তা করে।
১০৮ নম্বরটি প্রাকৃতিক এবং মহাজাগতিক চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকে বলে অনেকে মনে করেন। উদাহরণস্বরূপ, জপের মালায় সব সময় ১০৮ টি পুঁতি ব্যবহার করা হয়। এই পুঁতি গুনে গুনে মন্ত্রোচ্চারণ করা হয়ে থাকে। অনেকের মতে মালা জীবন চক্রের প্রতীক এবং মন্ত্রের প্রতিটি পুনরাবৃত্তি এই প্রাকৃতিক ছন্দ এবং চক্রের সঙ্গে একাত্ম হতে সাহায্য করে।
১০৮ বার জপ মন, শরীর এবং আত্মার উপর একটি বিশুদ্ধ প্রভাব ফেলে বলে মনে করা হয়। মন থেকে নেতিবাচক শক্তি দূরে যায়, মানসিক বাধা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। এই অভ্যাসটি অভ্যন্তরীণ শান্তি বৃদ্ধি করে।