রথযাত্রার তারিখ, সময় ও তিথি
২০২৫ সালে রথযাত্রা ২৭শে জুন, শুক্রবার পালিত হবে। আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
সেই অনুসারে তিথি শুরু ও শেষের সময় হল —
দ্বিতীয়া তিথি শুরু: ২৬শে জুন, ২০২৫ বিকেল ১:২৫ মিনিটে
দ্বিতীয়া তিথি শেষ: ২৭শে জুন, ২০২৫ সকাল ১১:১৯ মিনিটে
চলতি বছর উল্টো রথযাত্রার (বাহুড়া যাত্রা) তারিখ: ৪ জুলাই, ২০২৫ (শুক্রবার)
রথযাত্রার তাৎপর্য
রথযাত্রা হিন্দু ধর্মের এক অতি প্রাচীন এবং জনপ্রিয় উৎসব। মূলত যা ভগবান জগন্নাথদেবকে উৎসর্গীকৃত। এটি আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে অনুষ্ঠিত হয। এর মূল আকর্ষণ বিশাল রথে জগন্নাথদেব, বলরাম ও সুভদ্রার বিগ্রহ স্থাপন করে শোভাযাত্রায় বের হওয়া। ওড়িশার পুরীধামের রথযাত্রা বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত। তবে পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের রথযাত্রাও ভক্তদের মনে বিশেষ স্থান করে নিয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশেও এই উৎসব মহা ধুমধামে পালিত হয়।
কীভাবে শুরু হল রথযাত্রা?
রথযাত্রার উৎপত্তি নিয়ে বিভিন্ন কিংবদন্তি প্রচলিত আছে। সবচেয়ে প্রচলিত বিশ্বাস, এই দিনে ভগবান জগন্নাথ তাঁর বড় ভাই বলরাম এবং বোন সুভদ্রাকে নিয়ে পুরীর জগন্নাথ মন্দির থেকে গুন্ডিচা মন্দিরে (মাসির বাড়ি হিসাবে পরিচিত) যান। এটি তাদের বছরে একবার ‘মাসির বাড়ি যাওয়া’। ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে এই যাত্রায় অংশ নিলে বা রথের দড়ি স্পর্শ করলে মোক্ষ লাভ হয়। এর মাধ্যমে ভগবান ভক্তদের কাছে আসেন এবং তাঁদের দুঃখ-কষ্ট দূর করেন। এটি কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি সামাজিক সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে মিলেমিশে এই উৎসবে অংশ নেন।
রথযাত্রার মূল আকর্ষণ
রথযাত্রার মূল আকর্ষণ তিনটি সুবিশাল রথ – জগন্নাথদেবের জন্য নন্দীঘোষ, বলরামের জন্য তালধ্বজ এবং সুভদ্রার জন্য দর্পদলন বা পদ্মধ্বজ। এই রথগুলি সম্পূর্ণ কাঠ দিয়ে তৈরি হয় এবং প্রতি বছর নতুন করে নির্মিত হয়। রথগুলি বর্ণিল বস্ত্র, ফুল এবং বিভিন্ন নকশার দিয়ে সাজানো হয়। লক্ষ লক্ষ ভক্ত রথের দড়ি ধরে টানেন, যা এক অসাধারণ দৃশ্যের সৃষ্টি করে। জয় জগন্নাথ ধ্বনিতে মুখরিত হয় চারদিক।
মহারাজের আচার
রথযাত্রা শুরুর আগে জগন্নাথ মন্দিরে বিশেষ পূজা-অর্চনা হয়। এরপর পুরীর গজপতি মহারাজ (রাজা) ঐতিহ্যবাহী "ছেরা পহরা" আচার পালন করেন, যেখানে তিনি সোনার ঝাড়ু দিয়ে রথের পথ পরিষ্কার করেন। এই কাজটি প্রতীকীভাবে বোঝায় যে, রাজার সেবার মনোভাব সর্বাগ্রে, এমনকি ঈশ্বরের সেবাতেও।