একটা সময় ছিল, হুড়মুড়িয়ে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছিল। কড়া হাতে লকডাউন পালন, নজরদারি, পরীক্ষার ফলে মুম্বইয়ের সেই ধারাভি বস্তিতে চলতি সপ্তাহে টানা তিন দিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০-এর নীচে নেমেছে। এই অবস্থায় বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম বস্তির মডেলের ভূয়সী প্রশংসা করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে হু'র ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রোস অ্যাডহ্যানোম গ্যাব্রিয়েসাস জানান, মাত্রাছাড়া সংক্রমণ সত্ত্বেও পরিস্থিতি যে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভবপর, তা প্রমাণ করে দেখিয়েছে বিশ্বের কয়েকটি এলাকা। দৃষ্টান্ত হিসেবে ধারাভির নামও উল্লেখ করেন তিনি। হু'র ডিরেক্টর জেনারেল বলেন, ‘এরকম কয়েকটি উদাহরণ হল ইতালি, স্পেন এবং দক্ষিণ কোরিয়া, এমনকী ধারাভি - মুম্বই মহানগরীর একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা।’কীভাবে ঘুরে দাঁড়াল বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম বস্তি, দেখে নিন -১) আড়াই বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত ধারাভিতে প্রায় ৮০০,০০০ মানুষের বাস। ভাঙাচোরা বাড়ি এবং ঘুপচিতে থাকেন মানুষ। রয়েছে গলি-তস্য গলি, খোলা নর্দমা।২) গত ১১ মার্চ মুম্বইয়ে প্রথম করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছিল। আর ধারাভিতে করোনা প্রথম থাবা বসিয়েছিল ১ এপ্রিল।৩) ধারাভিতে করোনা ঢুকে যাওয়ায় রীতিমতো আশঙ্কিত হয়ে পড়েন প্রশাসনের কর্তারা। সেখানে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেলে এমনিতেই করোনার ভয়াল থাবার ধুঁকতে থাকা মুম্বইয়ের অবস্থা কী হবে, তা ভেবে রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছিল। সেই অবস্থায় প্রশাসনের তরফে যাবতীয় পদক্ষেপ করা হয়। শুরু হয় নিরন্তর নজরদারি এবং স্ক্রিনিং। একনাগাড়ে চলে স্যানিটাইজেশন।৪) শুক্রবার ধারাভিতে ১২ জন নয়া আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। তার আগের গত মঙ্গলবার, বুধবার এবং বৃহস্পতিবার এক, তিন এবং ন'জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।৫) শুক্রবার পর্যন্ত ধারাভিতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২,৩৪৭। তার মধ্যে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ১৬৬। ১,৮১৫ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ৬) গত মাসে ধারাভিতে দৈনিক ১৮ জন করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলছিল। পয়লা জুন ৩৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেটাই একদিনে সর্বোচ্চ ছিল। চলতি মাসের শুরু থেকে নয়া আক্রান্তের সংখ্যা কমছে।৭) ধারাভির ইতিমধ্যে ছ'লাখের বেশি মানুষের স্ক্রিনিং হয়েছে।