সম্প্রতি ‘ইন্ডিয়া জাস্টিস রিপোর্ট ২০২৫’ প্রকাশিত হয়েছে। পুলিশ, বিচার বিভাগ, কারাগার, আইনি সহায়তা নিয়ে দেশজুড়ে সমীক্ষা চালানোর পর এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে সব রাজ্যগুলির মধ্যে একেবারে শেষ স্থানে জায়গা পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। অন্যদিকে, বিচার ব্যবস্থা ক্ষেত্রে দেশের ১৮ টি হাইকোর্টের মধ্যে ১৭ নম্বরে ঠাঁয় পেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। (আরও পড়ুন: দেশে 'ধর্মীয় যুদ্ধের' জন্য দায়ী সুপ্রিম কোর্ট? সাংসদের মন্তব্য নিয়ে কী বলল BJP)
আরও পড়ুন: রাজ্যের থানাগুলিতে সিসি ক্যামেরার অবস্থা কেমন? ডিজির কাছে রিপোর্ট তলব হাইকোর্ট
রিপোর্ট অনুযায়ী, দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলি পুলিশি, ন্যায়বিচার প্রদান এবং কারা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সেরা পারফর্ম করছে। প্রথম পাঁচে রয়েছে দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলি। সেক্ষেত্রে চারটি মাপকাঠিতে দেশের মধ্যে প্রথম স্থান পেয়েছে কর্ণাটক। এছাড়াও, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গনা, কেরল এবং তামিলনাড়ু প্রথম পাঁচের মধ্যে রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে কর্ণাটকের স্কোর হল ৬.৭৮। অথচ পশ্চিমবঙ্গের স্কোর মাত্র ৩.৬৩। পশ্চিবঙ্গের উপরে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড।
প্রতিবেদনে অপরাধ দমন এবং ন্যায়বিচার প্রদানের প্রক্রিয়ায় রাজ্যগুলি কোথায় অগ্রগতি করছে বা পিছিয়ে পড়ছে তাও তুলে ধরা হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত পুলিশের বিভাগে সবচেয়ে বেশি উন্নতি দেখিয়েছে বিহার। যদিও জনসংখ্যার অনুপাতের দিক থেকে বিহারে পুলিশ কম রয়েছে। জাতীয়ভাবে পুলিশ ও জনসংখ্যার অনুপাত হল ১০০,০০০ জনসংখ্যা পিছু ১৫৫ জন পুলিশ। সেখানে প্রতি লক্ষ লোকের জন্য মাত্র ৮১ জন পুলিশ রয়েছে। ইন্ডিয়া জাস্টিস রিপোর্ট ২০২৫ অনুযায়ী, ২০২২ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে রাজস্থান, কেরল এবং মধ্যপ্রদেশ বিচারের সূচকে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে।কারাগার সংক্রান্ত সূচকে ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ড সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে।আইনি সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে হরিয়ানা সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে।
উল্লেখ্য, টাটা ট্রাস্টের তত্ত্বাবধানে ২০১৯ সালে ‘ইন্ডিয়া জাস্টিস রিপোর্ট’ নামে এই সমীক্ষা শুরু হয়। যদিও কলকাতা হাইকোর্ট ১৭ তম স্থানে রিপোর্টে জায়গা পাওয়ায় শূন্যপদে নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন আইনজীবীদের অনেকেই। তাঁদের একাংশের অভিযোগ, হাইকোর্টের বার থেকে নিয়োগ সেভাবে হচ্ছে না। বাইরে থেকে বিচারপতি এলে কাজ বুঝতে বেশ কিছুটা সময় লেগে যায়। এতে মামলার দীর্ঘসূত্রিতা বাড়ে। এবিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী মুকুল বিশ্বাস বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটা সত্যি যে হাইকোর্ট লিগ্যাল এইড এ আবেদন করেও বিচারপ্রার্থীরা আইনজীবী পান না।’ তাঁর অভিযোগ, ‘বিচারব্যবস্থার মধ্যেও রাজনীতির মেরুকরণ তৈরি হয়েছে। ফলে আইনি পরিকাঠামো ঢেলে সাজানো প্রয়োজন। বিচারব্যবস্থার নামে প্রহসন বন্ধ করতে হবে।’