উত্তরাখণ্ডের চামোলিতে তুষারধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আট। রবিবার বিকেলে আরও চার শ্রমিকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে উত্তরাখণ্ডে ৪৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছিল। শনিবার আবহাওয়া খারাপ থাকায় উদ্ধারকাজ বন্ধ হয়ে যায়। রবিবার ফের উদ্ধারে নামেন সেনাবাহিনী-সহ বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যরা। বরফের চাঁই তুলতেই সকলের মুখ ছোট হয়ে যায়। বেরিয়ে আসে বরফে ঢাকা মৃতদেহ। রবিবারই উদ্ধারকাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার মোলি জেলায় বদ্রীনাথের কাছে মানা গ্রামে তুষারধসে মোট ৫৪ জন শ্রমিকের চাপা পড়ার খবর মেলে। তারপর থেকে রবিবার পর্যন্ত ৪৬ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা গিয়েছে। মারাত্মক তুষারপাত, বৃষ্টি ও পাহাড়ি ধসের প্রতিকূলতার মধ্যে উদ্ধারকাজ চালিয়েছে সেনা। রবিবার সকালেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পদে-পদে বাধা পেতে হচ্ছিল উদ্ধারকারী দলকে।
প্রবল তুষারপাত ও বৃষ্টির কারণে শুক্রবার রাতের পর উদ্ধারকাজ কিছুটা স্থগিত রাখা হয়। তবে রবিবার সকালে আবহাওয়া পরিষ্কার থাকায় পুনরায় কাজ শুরু হয় জোরকদমে। ভারতীয় সেনা, আইটিবিপি, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, বিআরও এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর প্রায় ২০০-রও বেশি কর্মী অক্লান্ত পরিশ্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন
উদ্ধারের কাজে ব্যবহার করা হয় আধুনিক প্রযুক্তি-ভিক্টিম লোকেটিং ক্যামেরা, থার্মাল ইমেজিং ক্যামেরা, দিল্লি থেকে আনা হয়েছে গ্রাউন্ড পেনিট্রেশন ব়্যাডার এবং প্রশিক্ষিত অ্যাভালাঞ্চ রেসকিউ ডগ। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় আজ ড্রোন, ইউএভি, এমআই ১৭ হেলিকপ্টার ও তিনটে চিতা হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়।
উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার মানা গ্রামের কাছে কাজ চলছিল। দায়িত্বে ছিল বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন। তাদেরই একটি ক্যাম্প সম্পূর্ণভাবে বরফের নীচে চাপা পড়ে যায়। শনিবার সকালে পরিস্থিতি, উদ্ধারকাজের তৎপরতা ও আবহাওয়া সংক্রান্ত খোঁজখবর নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর রবিবার রাতে উদ্ধারকাজ শেষের পরে মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী সেই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেন। আর উদ্ধারকারীদের সাহসিকতার প্রশংসা করেন।
এদিকে, হৃষিকেশ-বদ্রিনাথ জাতীয় সড়ক কর্ণপ্রয়াগের কাছে তুষারপাতে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দুধারে অসংখ্য গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে চামোলির মানা গ্রামে তুষারধসের কারণে এই জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে রয়েছে। বদ্রীনাথ-জ্যোতির্মঠ জাতীয় সড়কের অন্তত ১৫-২০টি স্থানও অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে।