যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরমাণু সমঝোতা আলোচনা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। এর মধ্যে আবার সংঘাতের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এই সবের মাঝে মধ্যপ্রাচ্য থেকে তাদের কিছু কর্মীকে প্রত্যাহার করার পথে হাঁটল ওয়াশিংটন। মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার কথা উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই অঞ্চলকে বিপজ্জনক বলে অভিহিত করেছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প এই নিয়ে বলেছেন, 'তাদের (মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে নিযুক্ত কূটনীতিক) সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে কারণ সেটা বিপজ্জনক জায়গা। আমরা সেখানকার পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি...' এদিকে ইরান প্রসঙ্গে ট্রাম্প সাফ বলে দেন, 'তারা পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে পারবে না। খুব সিম্পল। আমরা তা হতে দেব না।' এদিকে আরকানসার একজন মার্কিন সেনেটর টম কটন বৃহস্পতিবার দাবি করেছেন যে প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ নিশ্চিত করেছেন যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দিকে কাজ করছে। (আরও পড়ুন: ইউনুসের প্রেস সচিব ভুলে গেছিলেন ওটা লন্ডন, ঢাকা না! ডাহা মিথ্যা বলে পড়লেন ধরা)
আরও পড়ুন: ডিএ মামলায় নয়া মোড়, ২৫% বকেয়া মেটাবে না সরকার? নয়া পদক্ষেপ রাজ্যের
এর আগে ইরান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিল, যদি পরমাণু আলোচনা ব্যর্থ হয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক সংঘাত শুরু হয় তাহলে তারা ওই অঞ্চলে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালাবে। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদেহ এ কথা বলেন। পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে ষষ্ঠ দফা আলোচনার আগে ক্রমেই উত্তেজনা বাড়ছে। এরই মধ্যেই ইরানি মন্ত্রী এহেন হুঁশিয়ারি দিলেন। যার জেরে এবার পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে আমেরিকাও। মধ্যপ্রাচ্য থেকে নিজেদের দূতদের ফেরত ডাকছে আমেরিকা। এরই মাঝে আবার রবিবার ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগাচির সঙ্গে ওমানে দেখা করতে পারেন মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। (আরও পড়ুন: রাজকে ঘুঁটি বানিয়ে তৃতীয় কারও সঙ্গে পালানোর ছক ছিল সোনমের? আরও ঘনীভূত রহস্য)
আরও পড়ুন: সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে 'অভূতপূর্ব অংশীদার' পাকিস্তান, দাবি US জেনারেলের
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের পরমাণু সমঝোতা (জেসিপিওএ) পুনর্বিবেচনার লক্ষ্যে গত এপ্রিলে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরমাণু আলোচনা শুরু হয়। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্প ক্ষমতায় ফেরার পর তিনি ইরানের ওপর 'চাপ' প্রয়োগের নীতি পুনর্বহাল করেন। যার মধ্যে সামরিক পদক্ষেপের হুমকির পাশাপাশি কূটনৈতিক প্রচেষ্টাও রয়েছে। এই আবহে ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নাসিরজাদেহ বলেছেন, 'কিছু মার্কিন কর্মকর্তা হুমকি দিচ্ছেন যে, আলোচনা ব্যর্থ হলে সংঘাত শুরু হতে পারে। যদি আমাদের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হয়, তবে এই অঞ্চলে থাকা সব আমেরিকান ঘাঁটিই হবে আমাদের লক্ষ্য। আমরা বিনা দ্বিধায় তাদের ওপর হামলা চালাব।' (আরও পড়ুন: পাক সেনা প্রধান মুনিরকে আমেরিকার আমন্ত্রণ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কংগ্রেস সাংসদ)
আরও পড়ুন: হোমস্টেতে 'মঙ্গলসূত্র' ফেলে এসেছিল সোনম রঘুবংশী, তাতেই খটকা লেগেছিল পুলিশের
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কী? বুধবার এক পডকাস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, পরমাণু সমঝোতা নিয়ে তিনি আগের চেয়ে কম আশাবাদী। তাঁর কথায়, 'কয়েক মাস আগেও আমি যতটা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, এখন আর ততটা নেই। কিছু ঘটেছে, তবে আমি এখন চুক্তিটি সম্পর্কে কম আশাবাদী।' ট্রাম্প পুনর্ব্যক্ত করেন যে, প্রয়োজনে সামরিক পদক্ষেপের মাধ্যমে ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প বলেন, তিনি আশা করছেন, বৃহস্পতিবার দুই দেশ আলোচনায় বসবে। অন্যদিকে তেহরান বলেছে রবিবার ওমানে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। (আরও পড়ুন: রাস্তায় বিক্ষুব্ধ বাংলাদেশিদের তাড়া খেলেন ইউনুসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম!)
আরও পড়ুন: ১২০০ BSF জওয়ানকে নিয়ে যেতে নোংরা ট্রেন পাঠাল রেল,সাসপেন্ড আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ৪
ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি কেবল বেসামরিক উদ্দেশ্যে। তবে পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই সন্দেহ করে আসছে যে, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে চায়। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে বলেছে, ইরান ৬০ শতাংশ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে, যা ২০১৫ সালের চুক্তিতে নির্ধারিত সীমার চেয়ে অনেক বেশি। প্রসঙ্গত, পারমাণবিক অস্ত্রের জন্য প্রয়োজন ৯০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরনিয়াম। সেই পর্যায়ের আরও কাছে পৌঁছে গিয়েছে ইরান।