কেউ মাটিতে বসে হাউমাউ করে কাঁদছেন। কেউ এতটাই ভেঙে পড়েছেন যে তাঁকে সামলানো যাচ্ছে না। কাউকে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হচ্ছে। মহাকুম্ভে পদপিষ্টের ঘটনার পরে এরকম একাধিক দৃশ্য দেখা যাচ্ছে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের ত্রিবেণী সংগম লাগোয়া এলাকায়। সেইসঙ্গে এমনও দৃশ্য দেখা গিয়েছে যে মুখে চাপা দিয়ে কাউকে স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আবার এরকম দৃশ্যও দেখা গিয়েছে যে রাস্তায় কাউকে-কাউকে শুইয়ে রাখা হয়েছে। তাঁদের পুরো দেহ চাদর বা কম্বলে চাপা দেওয়া আছে। তাঁদের মধ্যে সকলের শরীরে আদৌও প্রাণ আছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়। আপাতত প্রশাসনের তরফে পদপিষ্টের ঘটনায় কারও মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়নি। তবে নাম গোপন রাখার শর্তে কয়েকজন ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-কে জানিয়েছেন যে হাসপাতালে কমপক্ষে ১৫ জনের মৃতদেহ আনা হয়েছে।
'কোনও গুজবে একদম কান দেবেন না', বার্তা যোগীর
সেই বিষয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেননি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। পুণ্যার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি শুধু বলেছেন, 'আপনারা মা গঙ্গার যে ঘাটের কাছে আছেন, সেখানেই স্নান করে নিন। সংগমের নাকের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। আপনারা সকলে প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলুন। যা পদক্ষেপ করা হচ্ছে, তাতে সহযোগিতা করুন। সংগমের প্রতিটি ঘাটে শান্তিপূর্ণভাবে স্নান-পর্ব চলছে। কোনও গুজবে একদম কান দেবেন না।'
যোগীর সঙ্গে ৩ বার কথা মোদীর
তারইমধ্যে পদপিষ্টের ঘটনা নিয়ে যোগীর সঙ্গে ইতিমধ্যে তিনবার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সূত্রের খবর, মহাকুম্ভের পরিস্থিতির উপরে প্রধানমন্ত্রী লাগাতার নজর রাখছেন। যাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা যায় এবং ঠিকমতো সহায়তা প্রদান করা যায়, তা নিয়ে যোগীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিচ্ছেন বলেও সূত্রের খবর।
সকাল ৬টা পর্যন্ত ১.৭৫ কোটি পুণ্যস্নান
তারইমধ্যে আবার মৌনী অমাবস্যার ‘অমৃত স্নান’-র জন্য ত্রিবেণীর সংগমে (গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতী সংগমস্থল) প্রচুর পুণ্যার্থী জড়ো হয়েছেন। উত্তরপ্রদেশ সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আজ সকাল ছ'টা পর্যন্ত ১.৭৫ কোটি মানুষ পুণ্যস্নান সেরে ফেলেছেন। যে সংখ্যাটা ১০ কোটিতে পৌঁছে যাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এমনিতেই হিন্দু মৌনী অমাবস্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। আর এবারের মৌনী অমাবস্যায় ১৪৪ বছর পরে 'ত্রিবেণী যোগ' তৈরি হয়েছে। ফলে দিনটি হিন্দু ধর্মের মানুষের কাছে আরও বিশেষ হয়ে উঠেছে।