শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের সুপারিশ করল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ২০২৫ সালের নিয়মাবলীর যে খসড়া প্রকাশ করেছে ইউজিসি, তাতে প্রার্থীরা কোন বিষয়ে শিক্ষকতা করতে পারবেন, সেটার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সুপারিশ করা হয়েছে। ইউজিসির সুপারিশ অনুযায়ী, যে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সর্বোচ্চ স্তরের স্পেশালাইজেশন করেছেন (প্রাথমিকভাবে যে বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেছেন, সেটা ছাড়া অন্য বিষয় হলেও), সেই বিষয়েরও শিক্ষকতা করতে পারবেন। অর্থাৎ কোনও প্রার্থী স্নাতক বা স্নাতকোত্তরে যে বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেছেন, সেটার পরিবর্তে অন্য কোনও সাবজেক্টে তিনি যদি নেট (ন্যাশনাল এলিজিবিটি টেস্ট) উত্তীর্ণ হন, তাহলে তাতে শিক্ষকতা করার সুযোগ পাবেন।
অঙ্ক নিয়ে পড়েও রসায়ন পড়াতে পারবেন!
ধরা যাক, কোনও প্রার্থী ইতিহাস নিয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরের পড়াশোনা করেছেন। তবে তিনি পিএইচডি করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রার্থী রাষ্ট্রবিজ্ঞানেরও শিক্ষকতা করতে পারবেন। একইভাবে যদি অঙ্ক নিয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরের পড়াশোনা করে থাকেন এবং রসায়নে পিএইচডি করে থাকেন, তাহলে কেমিস্ট্রিতে (রসায়ন) শিক্ষকতা করতে পারবেন কোনও প্রার্থী।
উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে কী সুপারিশ UGC-র?
শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের খসড়া নিয়মাবলী অনুযায়ী, উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রেও আমূল পরিবর্তন করা হবে। শুধুমাত্র শিক্ষাবিদ নন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুণী ব্যক্তিদেরও উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করা যেতে পারে। অর্থাৎ শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান থাকা শিল্প, প্রশাসন, নীতি নির্ধারণের মতো জগতের বিশিষ্টদেরও উপাচার্য হিসেবে নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে বলে ইউজিসির খসড়া নিয়মাবলীতে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: West Bengal School: কতজন পড়ুয়া আর কতজন শিক্ষক? সব জানাতে হবে, স্কুলে গেল নির্দেশ
আর কী কী সুপারিশ করা হয়েছে?
১) শুধু পুঁথিগত বিদ্যা নয়, বাস্তবিক ক্ষেত্রে শিক্ষার নিরিখেও বিচার করা হবে প্রার্থীদের।
২) অনুমোদিত পদ ছাড়াও শিক্ষকতা এবং গবেষণার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রের পেশাদারি বিশেষজ্ঞরা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন।
৩) বিশেষজ্ঞদের নেতৃত্বাধীন কমিটির মাধ্যমে উপাচার্য নিয়োগ করা হবে, যাতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে।
৪) যে সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নিয়ম পালন করবে না, সেগুলিকে জরিমানার মুখে পড়তে হবে।
৫) তফসিলি জাতি, তফসিলি উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) প্রার্থীদের পাশাপাশি আর্থিকভাবে দুর্বল প্রার্থী এবং বিশেষভাবে সক্ষম প্রার্থীদের ক্ষেত্রে আরও ছাড়ের সুপারিশ করা হয়েছে।
৬) লাইব্রেবিয়ান এবং খেলাধুলোর দায়িত্বপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে নয়া সুপারিশ: ডিজিটাইলাইজেশন, দেশীয় খেলা এবং জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অবদানের উপরে জোর দেওয়া হবে।