টানা ১৭ দিন ধরে অন্ধকার টানেলে দিন কেটেছে ৪১ জন শ্রমিকের। এরপর অবশেষে গতকাল সন্ধ্যায় উদ্ধার করা হয় তাঁদের। উদ্ধার হওয়া শ্রমিকদের মধ্যে একজন হলেন ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা অনিল বেড়িয়া। সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন অনিল। তিনি দাবি করেন, প্রথম ১০ দিন সুড়ঙ্গের পাথরের গা বেয়ে গড়িয়ে পড়া জল এবং শুকনো মুড়ি খেয়ে দিন কাটিয়েছিলেন তাঁরা। ২২ বছর বয়সি অনিল বলেন, 'যখন ঘটনাটা ঘটে তখন ভয়াবহ আওয়াজে কেঁপে উঠেছিল গোটা জায়গাটা। আমরা সবাই ভেবেছিলাম যে আমরা বুঝি জীবন্তই চাপা পড়ে যাব পাথরে। আমরা প্রথম দুই দিনে কোনও আশাই রাখিনি বেঁচে ফেরার।' (আরও পড়ুন: ১৭ দিন পর ভোরের সূর্যের দেখা পেলেন ৪১ শ্রমিক, কেমন কাটল তাঁদের নতুন সকাল?)
অনিল বলেন, 'বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা ছিল। পাথরের গা বেয়ে যে জল গড়িয়ে পড়ছিল, সেটা চেটে চেটে খেতাম আমরা। প্রথম দশদিন খাবার বলতে মুড়ি খেয়ে বেঁচে ছিলাম।' অনিলের কথায়, 'ধস নামার প্রায় ৭০ ঘণ্টা পর আমরা উদ্ধারকারী দলের আওয়াজ শুনতে পাই। এরপরই আমরা আশা ফিরে পাই।' অনিল জানায়, প্রথম দশদিনের পরে ডাল, ভাত, রুটি, কলা, পানীয় জল তাঁদের কাছে এসে পৌঁছেছিল টানেলের মধ্যে দিয়ে। তিনি বলেন, 'আমরা সবাই একসঙ্গে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতাম যাতে জলদি মুক্তি পেয়ে যাই। অবশেষে ভগবান আমাদের কথা শুনেছে।' উল্লেখ্য, অনিল রাঁচির অদূরে অবস্থিত খৈরবেড়া গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর গ্রাম থেকে মোট ১৩ জন ১ নভেম্বর উত্তরকাশীতে কাজ করতে এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন আটকে পড়েছিলেন এই টানেলে। টানেলে আটকে পড়া ৪১ জনের মধ্যে ১৫ জনই ছিলেন ঝাড়খণ্ডের।
আরও পড়ুন: টানেল থেকে মুক্তি পাওয়া ৪১ শ্রমিকের সঙ্গে ফোনে কথা মোদীর, কী বললেন প্রধানমন্ত্রী
এদিকে টানেল থেকে মুক্তি পাওয়া এক শ্রমিক, বিশ্বজিৎ কুমার বর্মা নিজের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে বলেন, 'আটকে পড়ার প্রথম ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা আমাদের সমস্যা হয়েছিল। এরপর আমাদের কাছে খাবার ও জল পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। ১০ দিনের মাথায় একটি পাইপ আমাদের ওখানে পৌঁছে যায়। তাতে করে ডাল, ভাল, রুটি, ড্রাইফ্রুট সবই এসেছে।' এদিকে ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা সুবোধ কুমার বর্মা বলেন, 'আমি সম্পূর্ণ সুস্থ। কোনও সমস্যা হচ্ছে না আমার।' বাকি শ্রমিকদের মধ্যেও কেউ শারীরিক কোনও অসুস্থতার কথা জানাননি।