শহরে গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনজন যুবক বিভিন্ন স্থানে ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মৃতদের মধ্যে সোনারির ডিজে পরিচালক সাহিল মুন্ডা, বিরসানগরের কুন্দন কুমার এবং ধাতকিডিহের মোহাম্মদ আরিফ রয়েছেন। তাঁদের সকলের মৃতদেহ তাঁদের বাড়িতে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে, যার ফলে আশেপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে, অন্যদিকে পরিবারের সদস্যরা শোকে ভেঙে পড়েছেন।
বাড়িতে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় মৃতদেহ
প্রথম ঘটনাটি বিরসানগর থানা এলাকার। ৩০ বছর বয়সী কুন্দন কুমারের মৃতদেহ বুধবার সকালে তার বাড়ির একটি ঘরে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন যে কুন্দন রাত পর্যন্ত তার ঘরে ছিল এবং সকালে যখন দরজা খোলা হয়নি, তখন তারা সন্দেহ করে জানালা দিয়ে ভেতরে ঢুকে দেখে। এরপর তাড়াতাড়ি পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে আত্মহত্যার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, তবে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি।
মানসিক চাপে ছিলেন আরিফ
দ্বিতীয় ঘটনাটি ধাতকিডিহের। মোহাম্মদ আরিফ (প্রায় ৪৩ বছর) এর মৃতদেহও একইভাবে তার বাড়িতে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন যে আরিফ গত কয়েকদিন ধরে মানসিক চাপে ছিলেন, কিন্তু কেউ ভাবেনি যে তিনি এমন পদক্ষেপ নেবেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে এবং পারিবারিক, মানসিক ও সামাজিক কারণগুলি খতিয়ে দেখছে।
ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের অপেক্ষায় পুলিশ
উভয় ঘটনাতেই কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। পুলিশ পরিবারের সদস্য এবং আশেপাশের লোকদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। উভয় মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে, তার প্রতিবেদন আসার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ক্রমবর্ধমান আত্মহত্যার ঘটনা উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠছে।
বুধবার সকালে সোনারিতে ডিজে পরিচালক সাহিল মুন্ডা (২৩) ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। সাহিল পেশায় ডিজে সাউন্ড সিস্টেম পরিচালক ছিলেন। পরিবারের সদস্যরা তার ঘরের দরজা খোলা না দেখে সন্দেহ করতে শুরু করেন। এরপর জানালা দিয়ে ঢুকে দেখা যায় যে তরুণটি ফাঁসিতে ঝুলছে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে মৃতদেহটি এমজিএম ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ কোনও সুইসাইড নোট পায়নি। পরিবারের সদস্যরা মানসিক চাপ বা আর্থিক সমস্যাকে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে দেখছেন, অন্যদিকে পুলিশ আশেপাশের লোকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার গভীর তদন্ত করছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, সাহিল গত কয়েকদিন ধরে মানসিক চাপে ছিলেন এবং মানুষের সাথে মেলামেশা কমিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু কেউই এই গুরুতর পরিস্থিতির আন্দাজ করতে পারেনি। সোনারি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে মোবাইল কল ডিটেইলস, সাম্প্রতিক কার্যকলাপ এবং পারিবারিক পরিস্থিতির তদন্ত করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সাহিলের অকাল মৃত্যুতে সমগ্র এলাকা শোকাহত। পরিচিতরা জানিয়েছেন যে তিনি মিশুক এবং পরিশ্রমী যুবক ছিলেন, যার হঠাৎ মৃত্যুতে সকলেই শোকে ভেঙে পড়েছেন।