মেয়াদ শেষের ১১ মাস আগেই শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছিলেন অনুরা দিশানায়েকে। সেই মতো বৃহস্পতিবারই শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সংসদীয় ভোট। আর সেই নির্বাচনেও দেখা গেল লাল ঝড়। উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের সদস্য সংখ্যা ২২৫ জন। সেখানে অনুরা কুমারা ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার জোটের সদস্য সংখ্যা ছিল মাত্র ৩। তবে সেই সমীকরণ পুরোপুরি পালটে গেল এই নির্বাচনে। প্রসঙ্গত, শ্রীলঙ্কার সংসদে ১৯৬ সদস্যকে সরাসরি নির্বাচিত করেন ভোটাররা। জেলা ভিত্তিক ভোটের অনুপাতের ভিত্তিতে জয় নির্ধারণ করা হয়। বাকি ২৯টি আসনের ক্ষেত্রে, সারা দেশের মোট প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে দলগুলিকে তা বরাদ্দ করা হয়। এই আবহে ২২৫ আসনের সংসদে দিশানায়েকের জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া নিশ্চিত। (আরও পড়ুন: চুপিসারে হয়ে গেল গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক, বড় কোনও সুখবর পেতে চলেছেন সরকারি কর্মীরা?)
আরও পড়ুন: দিল্লিতে বসে হাসিনা… ঘুম উড়ে যাচ্ছে ইউনুস সরকারের! কী বলছে বাংলাদেশ?
এর আগে শ্রীলঙ্কার প্রথম মার্কসবাদী মনোভাবাপন্ন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন অনুরা কুমার দিশানায়েকে। আর এবার তাঁর জোট সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ইতিহাস গড়ছে। নির্বাচন কমিশনের ফলাফল অনুযায়ী, অনুরার ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার পার্টি পার্লামেন্টের ২২৫টি আসনের মধ্যে অন্তত ১২৩টি আসনে জয়ী হয়েছে। বিরোধী নেতা সাজিথ প্রেমেদাসার নেতৃত্বাধীন সামাগি জন বালাওয়েগায়া (ইউনাইটেড পিপলস পাওয়ার পার্টি) পেয়েছে ৩১টি আসন। তারা ভোট পেয়েছে মাত্র ১৮ শতাংশ। (আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ভারতের ইসকন, বার্তা সোজা মোদীকে)
আরও পড়ুন: প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পাবেন ৪ লাখ ডলার, তাঁর সরকারে পদ পাওয়া মাস্ক-বিবেকের বেতন কত
এর আগে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দিশানায়েকে নিজে মাত্র ৪২ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। তবে এই সংসদীয় নির্বাচনে তাঁর জোট পেয়েছে ৬২ শতাংশ ভোট। এদিকে ভোটের নিরিখে তৃতীয় স্থানে আছে রনিল বিক্রমসিংহের দল। আর চতুর্থ স্থানে আছে রাজাপক্ষে পরিবারের দল। এদিকে দেখা গিয়েছে, জাফনা সহ উত্তর শ্রীলঙ্কার বহু সংখ্যালঘু হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় জয়ী হয়েছে দিশানায়েকের দল। শ্রীলঙ্কার স্বাধীনতার পর থেকে এই প্রথম সেখানে জাতিগত সমীকরণের ঊর্ধ্বে গিয়ে নির্বাচন হল। এর আগের নির্বাচনে এই জোট মাত্র তিনটি আসন পেয়েছিল। খুব অল্প সময়ের জন্য কৃষিমন্ত্রীও হয়েছিলেন দিশানায়েক। তবে পরে রাজাপক্ষের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেন তিনি। এরপর শ্রীলঙ্কা অর্থনৈতিক সংকটে ডুবে যায়। গণঅভ্যুত্থানের পরিস্থিতি তৈরি হয়। রাজাপক্ষে দেশ ছাড়েন। রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। এই আবহে দেশের বেহাল দশা কাটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রেসিডেন্ট পদে বিপুল ভোটে জয়ী হন দিশানায়েক।