অনয়া দত্ত
প্রাথমিক মাপকাঠি পূরণ করতে পারেনি। সেজন্য এসডি বায়োসেন্সরের র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট কিটের আমদানি, বিক্রি এবং বণ্টনের উপর সাতদিনের নিষেধাজ্ঞা চাপাল সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোলঅর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও)।
ইতিমধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্থাকে শো-কজ নোটিশ ধরিয়েছিল ভারতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। কেন সংস্থার লাইসেন্স বাতিল বা রদ করা হবে, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সংস্থার তরফে যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, তাতে সন্তুষ্ট নয় সিডিএসসিও। তারপরই গত ৭ ডিসেম্বর সব রাজ্যের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলিকে নির্দিষ্ট ব্যাচ নম্বরের সব কিট তুলে দেওয়ার চিঠি পাঠানো হয়। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ‘সাতদিনের জন্য স্ট্যান্ডার্ড কিউ কোভিড-১৯ র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের সরঞ্জাম আমদানি, বিক্রি এবং বণ্টন করা যাবে না।’
ভারতে বিক্রির জন্য অনুমোদন পেতে যে কোনও র্যাপিড অ্যান্টিজেন কিটের ন্যূনতম ৯৫ শতাংশ নির্দিষ্টকরণ এবং ৫০ শতাংশ সংবেদনশীলতার প্রয়োজন হয়। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) এবং এইমসের প্রাথমিক মূল্যায়ন অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্থার কিটের ৯৯.৩ থেকে ১০০ শতাংশ নির্দিষ্টকরণ ছিল। সংবেদনশীলতা ছিল ৫০.৬ থেকে ৮৪ শতাংশ।
কিন্তু কোরিয়ার সংস্থার কিটের কম সংবেদনশীলতার কারণে দিল্লি সরকারকে পরে সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছিল। যার অর্থ হল যে অর্ধেক রোগীর ক্ষেত্রেও টেস্টের ফল নেগেটিভ হতে পারে। এমনিতেই রাজধানীতে প্রায় ৮০ শতাংশ র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট হয়েছিল।
বিভিন্ন সংস্থার অভিযোগ, নির্দিষ্ট নিয়মের নিরিখে কিটের কম নির্দিষ্টকরণ এবং সংবেদনশীলতা হওয়া সত্ত্বেও দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্থাকে প্রাধান্য দিচ্ছিল কেন্দ্র। শনিবার অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল ডিভাইস ইন্ড্রাস্টির (এআইএমইডি) তরফে আইসিএমআরের ডিরেক্টর জেনারেল বলরাম ভার্গবকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, নির্দিষ্ট মাপকাঠির থেকে (সংবেদনশীলতা ৫০ শতাংশ এবং নির্দিষ্টকরণ ৯৫ শতাংশ) বেশি সংবেদনশীলতা এবং নির্দিষ্টকরণ থাকা ১৪ টি করোনা র্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট প্রস্তুতকারকদের অনুমতি দিয়েছে আইসিএমআর। এসডি বায়োসেন্সরকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য কীভাবে টেন্ডারের মাপকাঠি পরিবর্তিত হতে পারে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। সেই চিঠিতে বলা হয়, ‘সরকারি বাজার থেকে র্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট কিনেছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রক এবং অন্যান্য রাজ্যগুলি। টেন্ডারে কোনও ন্যূনতম নির্দিষ্টকরণ এবং সংবেদনশীলতার মাপকাঠির উল্লেখ করা ছিল না। তার মানে হল যে আইসিএমআর অনুমোদিত যে কেউ আবেদন করতে পারেন।’
কিন্তু এক কিট প্রস্তুতকারী সংস্থার এক ব্যক্তির দাবি, ‘দুু'সপ্তাহ আগে সেটি পালটে ন্যূনতম ৮৫ শতাংশ সংবেদনশীলতা করেছে। যা মার্কিন এফডিএয়ের ৮০ শতাংশের থেকেও বেশি। তাই এখন শুধুমাত্র একটি সংস্থা এসডি বায়োসেন্সর সেই যোগ্যতামান পেরোচ্ছে।’ সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘প্রাথমিক বাজারে একচেটিয়া দাপট দেখিয়েছিল ওই সংস্থা। সেই সময় নমুনার জন্য ভারতে কোনও কিট ছিল না। এখন আবারও করবে। প্রতিটি কিটের দাম ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০ টাকা করা হয়েছে।’
বিষয়টি নিয়ে এসডি বায়োসেন্সরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।