২০০৪ সালে এনডিএ-কে হারিয়ে কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছিল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ। তখন কংগ্রেসের সভানেত্রী ছিলেন সোনিয়া গান্ধী। এই আবহে অনেকেই মনে করেছিলেন সোনিয়াই প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। তবে সোনিয়া গান্ধী নিজে ইউপিএ চেয়ারপার্সন হলেও প্রধানমন্ত্রী হননি। দেশের ত্রয়োদশ প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন মনমোহন সিং। এই নিয়ে ২০১৮ সালের এক অনুষ্ঠানে নিজের মত প্রকাশ করেছিলেন সোনিয়া। স্পষ্ট বলেছিলেন, 'জানতাম মনমোহন সিং আমার চেয়ে ভালো প্রধানমন্ত্রী হবেন'। (আরও পড়ুন: 'ভয় পেতাম না...', নিজের 'মৌন PM' তকমা নিয়ে যা বলেছিলেন মনমোহন সিং)
আরও পড়ুন: 'খুনের ষড়যন্ত্র', ভারত-বাংলাদেশ চুক্তির 'ফাঁকে' ফেরানো যাবে না হাসিনাকে?
উল্লেখ্য, দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ১০ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। যদিও তাঁর নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের 'ক্ষমতার আসল কেন্দ্রবিন্দু' ছিল অন্যত্র। জীবনে একবার মাত্র লোকসভা ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন মনমোহন সিং। তাতে তিনি হেরেছিলেন। তবে সংস্কারক হিসেবে নিজের দর বুঝিয়েছিলেন মনমোহন। তাই নির্বাচনী রাজনীতির অংশ না হয়েও সংসদে তিনি থেকেছেন। এদিকে 'জননেতা' হয়ে উঠতে পারেননি তিনি। তবে এর জন্যেই হয়ত মনমোহন সিংকেই ২০০৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন সোনিয়া গান্ধী। এদিকে ইউপিএ জমানায় ক্যাবিনেটের উপর ছিল ন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল। যা নিয়ে আজও বিতর্ক হয়। (আরও পড়ুন: 'ইতিহাস আমার প্রতি সদয় হবে', মিডিয়ার ওপর যখন 'অভিমান' করেছিলেন মনমোহন)
আরও পড়ুন: 'সারা বিশ্ব স্পষ্ট ভাবে শুনুক…', ৯১'র বাজেটে কী বলে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন মনমোহন?
আরও পড়ুন: ১৯৯১ সালের জুন, মনমোহন তখন ঘুমাচ্ছেন, সেই একটা ফোন কল বদলে দেয় ভারতকে...
২০০৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে ২০০৯ সালে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় ফের ক্ষমতায় আসে ইউপিএ। ১৯৯১ সালের পর কংগ্রেসের সবচেয়ে ভালো নির্বাচনী ফল হয়েছিল ২০০৯ সালে। আর তাতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মনমোহন। তবে নিজের দ্বিতীয় টার্মে তিনি পদে থাকলেও ক্ষমতা যেন তাঁর হাতে ছিল না। তবে তিনি তাও গদিতে বসেছিলেন। রাজনীতির কচকচানি সহ্য করেও জোট টিকিয়ে রেখেছিলেন তিনি। তবে রাজনীতির স্বার্থেই দুর্নীতির অভিযোগ সহ্য করতে হয়েছিল তাঁকে। তাঁর ক্যাবিনেটে পাশ হওয়া অর্ডিনেন্স ছিঁড়েছিলেন রাহুল গান্ধী। সেটাই যেন ছিল তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের অন্তের সূচনা। তখনও নীরব ছিলেন মনমোহন। পরে বিরোধীদের শত আক্রমণেও নীরব থেকেছেন মিতভাষী মনমোহন। তবে নিজের মতো দেশের হয়ে কাজ করেছেন। তিন দশক সংসদীয় রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও মনমোহন রাজনীতিবিদ হয়ে উঠতে পেরেছিলেন কি না, তা নিয়ে হয়ত সন্দেহ থেকে যেতে পারে অনেকের মনে, তবে তিনি যে 'সংস্কারক' ছিলেন, তা মেনে নিয়েছেন বিজেপি নেতারাও।