জঙ্গি হামলা কেবলমাত্র তাঁর বাবাকেই চিরকালের মতো কেড়ে নেয়নি, সেইসঙ্গে তাঁর এত দিনের স্বপ্নও ধ্বংস করে দিয়েছে! তিনি এতকাল ধরে স্বপ্ন দেখেছেন, আইএএস আধিকারিক হবেন। আর কি সেই স্বপ্ন সত্যি হবে? উত্তর হাতড়াচ্ছেন কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় নিহত চিকিৎসক শাহনওয়াজ দারের ছেলে মহসিন শাহনওয়াজ দার।
সোমবার সংবাদ সংস্থা এএনআইকে ডা. দারের ছেলে জানান, বাবার অবর্তমানে এবার তাঁকেই পরিবারের সমস্ত দায়-দায়িত্ব পালন করতে হবে। তাই প্রশাসনের কাছে তাঁর আর্তি, তারা অন্তত স্বপ্ন পূরণে তাঁকে সাহায্য করুক।
মহসিন বলেন, 'আমার বাবা ডা. শাহনওয়াজ দার একজন সৎ মানুষ ছিলেন। এই এলাকায় সকলেই তাঁকে সম্মান করেন। বাবা চাইতেন, আমিও তাঁর মতোই একজন চিকিৎসক হই। কিন্তু, আমি তার বদলে একজন আইএএস আধিকারিক হতে চেয়েছিলাম। আমার ঠাকুরদা একজন পুলিশ ইন্সপেক্টর ছিলেন। ওঁর আমার উপর ভরসা ছিল যে আমি আমার লক্ষ্যপূরণে অবশ্যই সফল হব।'
এরই সঙ্গে মহসিন জানান, 'আমি যাতে আইএএস হতে পারি, তার জন্য আমার বাবার পক্ষে যতটুকু যা করা সম্ভব ছিল, তা তিনি করেছিলেন। কিন্তু, গতকাল যখন ওঁর মৃত্যুর খবর পেলাম, মনে হল, আমার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল।'
উল্লেখ্য, শনিবার রাতের জঙ্গি হামলায় ডা. দার ছাড়াও সুশান্ত আবরল নামে এক ডিজাইনার এবং ছ'জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। তাঁরা গান্ডেরওয়ালের গুন্দে অবস্থিত তাঁদের শিবিরে ফিরছিলেন। সেই সময়েই হামলার মুখে পড়েন।
শ্রীনগর-লে জাতীয় সড়কের উপর একটি টানেল নির্মাণের কাজ চলছে। সেই নির্মাণস্থলেই হামলা চালায় সন্ত্রাসবাদীরা। এই ঘটনায় আরও পাঁচজন আহত হয়েছেন। তাঁদের শ্রীনগরের এসকেআইএমএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানেই তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
ইতিমধ্য়েই দ্য রেজিসট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামে একটি জঙ্গি সংগঠন এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। ঘটনায় জড়িতদের খোঁজে সোমবারও তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে নিরাপত্তাবাহিনী।
এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন এনসি সভাপতি ফারুক আবদুল্লা। এবং এই বর্বরোচিত আচরণের জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করেছেন তিনি।
এনসি নেতা বলেছেন, 'এই হামলা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কাজ করতে আসা গরিব শ্রমিক এবং এক চিকিৎসকের প্রাণ গিয়েছে। এটা করে জঙ্গিদের কী লাভ হল? তারা কি মনে করছে এভাবে এখানেও একটা পাকিস্তান গড়ে তুলবে? আমরা এসব চিরকালের মতো শেষ করতে চাইছি। যাতে আমরা এই দুর্দশা ঘোচাতে পারি।'
একইসঙ্গে, পাক নেতৃত্বের উদ্দেশে ফারুকের কড়া বার্তা, 'কাশ্মীর কখনও পাকিস্তান হবে না।'