রথযাত্রার জন্য় ধাপে ধাপে তৈরি হচ্ছে পুরী। কঠোর নিরাপত্তা থাকে প্রতি বছর। লাখ লাখ লোকের সমাগম। তবে এবার পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। তবে এবার পুরীর রথে একেবারে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হচ্ছে গোটা এলাকা।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ওড়িশার পুরীতে বার্ষিক রথযাত্রার আগে, ডিজিপি ওয়াই বি খুনারিয়া সোমবার সুরক্ষা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করেছেন এবং উপকূলীয় শহরের শ্রী জগন্নাথ মন্দিরের সুরক্ষার জন্য একটি রায়ট নিয়ন্ত্রণের গাড়ি 'বজ্র' চালু করেছেন, কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ডিজিপি ২৭ জুন রথযাত্রার নিরাপত্তা প্রস্তুতি এবং ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে পর্যালোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, 'রথযাত্রার জন্য পুরীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেছি। সভায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন এবং নিরাপত্তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। উৎসবের জন্য পুলিশি আয়োজন প্রায় শেষ পর্যায়ে। মন্দিরের ভিতরে এবং মন্দিরের বাইরের নিরাপত্তার দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ কর্মকর্তারা ভিড় নিয়ন্ত্রণ, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
মন্দির পরিদর্শনের সময়, ডিজিপি সম্ভাব্য হুমকি রোধ করতে এবং তীর্থযাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মন্দিরের কাছে মোতায়েন পুলিশ ও সুরক্ষা কর্মীদের প্রস্তুতির মূল্যায়ন করেছিলেন।
ওড়িশা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, 'ডিজিপি শ্রী যোগেশ বাহাদুর খুরানিয়া পুরীতে আসন্ন স্নান যাত্রা এবং বিশ্বখ্যাত রথযাত্রার সুষ্ঠু পরিচালনা, ভিড় নিয়ন্ত্রণ, ট্র্যাফিক ব্যবস্থার মসৃণ ব্যবস্থাপনা, গণ্যমান্য ব্যক্তিদের চলাচল এবং সুশৃঙ্খলভাবে দর্শন এবং নিরাপদ রথ টানা ইত্যাদি বিষয়ে সিনিয়র অফিসারদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
আধুনিক সুরক্ষা পরিকাঠামো, সিসিটিভির মনিটরে নজর রাখা, Rapid Response Team এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয়ের বিষয়টিও পর্যালোচনা করেছে।
‘ডিজিপি রথযাত্রা চলাকালীন ভিড় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনা, যানবাহন পার্কিং এবং জরুরি পরিস্থিতিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা তদারকি করেছেন,’ একজন সিনিয়র আধিকারিক জানিয়েছেন, জুনের শেষ সপ্তাহে প্রায় পনেরো দিন ধরে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
ভারত ও পাকিস্তান স্থল, আকাশ ও সমুদ্রে সব ধরনের গোলাগুলি ও সামরিক তৎপরতা বন্ধে সমঝোতায় পৌঁছালেও যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বর্তমানে রয়েছে তা যাতে কমানো না হয় এবং নিরাপত্তা প্রটোকল বজায় রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন ডিজিপি।
পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ নিতে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী অপারেশন সিঁদুর শুরু করার পর থেকে পুরী মন্দির ও তার আশেপাশে প্রচুর সুরক্ষা কর্মী মোতায়েন লক্ষ্য করা গেছে।
আধিকারিকরা জানিয়েছেন, মন্দির ও তার আশেপাশে অন্তত আট প্লাটুন (এক প্লাটুনে ৩০ জন কর্মী) মোতায়েন করা হয়েছে।
রথযাত্রা উৎসব এগিয়ে এলেই বাহিনী মোতায়েন আরও জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিক।
চলতি মাসের গোড়ায় ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (এনএসজি) কমান্ডোদের একটি দল নিয়মিত নিরাপত্তা পর্যালোচনা করে।
পুরী জেলার চারটি মেরিন থানায় গৃহীত ব্যবস্থা, সমুদ্র সৈকতে লাইফগার্ড মোতায়েন, মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের জন্য প্রচার কর্মসূচি নিয়েও ডিজিপি পর্যালোচনা করেছেন।