প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং ভারতীয় জনতা পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা অটল বিহারী বাজপেয়ীর ১০০ তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে পেন ধরলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই অটল বিহারী বাজপেয়ী নিজে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০২ সালে মোদীকে রাজধর্ম পালনের কথা বলেছিলেন। তখন মোদী গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যে চলছে দাঙ্গা। সেদিন গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে ভারতের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, 'রাজধর্ম পালন করা প্রয়োজন'। বাজপেয়ী বলেছিলেন, 'রাজার কাছে বা শাসকের কাছে প্রজায় প্রজায় ভেদ হয় না। জন্ম, জাতি বা সম্প্রদায়, কোনও কিছুর ভিত্তিতেই শাসক প্রজায়-প্রজায় ভেদাভেদ করতে পারেন না।' সেই সময় মোদী অস্বস্তি ভরা মুখে বাজপেয়ীকে জবাব দিয়েছিলেন, 'আমিও তাই করছি সাহেব।' সেই বাজপেয়ীকে নিয়ে আজ কী লিখলেন মোদী? (আরও পড়ুন: হাসিনাকে ফেরানো নিয়ে হম্বিতম্বি শেষ? 'প্র্যাক্টিকাল কথা' বলল ইউনুসের সরকার)
আরও পড়ুন: সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ, ফের কি দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হবে? ঠান্ডা পড়বে কবে?
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে এয়ারস্ট্রাইক পাকিস্তানের! মৃত ১৫, পালটা হামলার হুমকি তালিবানের
বাজপেয়ী স্তুতি করে মোদী আজ লেখেন, 'তিনি তাঁর দীর্ঘ সংসদীয় মেয়াদ মূলত বিরোধী বেঞ্চে কাটিয়েছেন। কংগ্রেস তাঁকে 'বিশ্বাসঘাতক' বলে অভিহিত করে তলানিতে নেমেছিল। তবে তিনি কখনও তিক্ততার চিহ্ন রাখেননি।' মোদীর কথায়, 'তিনি এমন একজন রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছেন, যিনি অসংখ্য মানুষকে অনুপ্রাণিত করে চলেছেন।' মোদী আরও বলেছেন যে তাঁর মতো অনেক ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্যের পক্ষে বাজপেয়ীর মতো ব্যক্তির কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার ছিল। মোদী বলেন, যখনই আদর্শ ও ক্ষমতার মধ্যে কোনও একটিকে বেছে নেওয়ার কথা এসেছে, বাজপেয়ী বরাবরই আদর্শকেই বেছে নিয়েছেন। (আরও পড়ুন: এবার লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের কয়েক কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করছে ইডি, জানানো হল আদালতে)
আরও পড়ুন: 'যে ৩-৪-৫% ডিএ…', রাজ্যের সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা নিয়ে সামনে এল বড় কথা
মোদীর কথায়, 'বাজপেয়ী জাতিকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন যে কংগ্রেসের কাছ থেকে একটি বিকল্প বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গি সম্ভব।' বাজপেয়ীর নেতৃত্বের এক অসাধারণ উদাহরণ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী মোদী ১৯৯৮ সালে ভারতের পরমাণু বোমা পরীক্ষণের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। মোদী লিখেছেন, সেই পরিস্থিতিতে যে কোনও সাধারণ নেতা বেঁকে বসতে পারতেন, কিন্তু অটলজি অন্য ধাতুতে তৈরি হয়েছিলেন। পারমাণবিক বোমা পরীক্ষা নিয়ে মোদী লেখেন, 'এই পরীক্ষাগুলি ভারতের বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের দক্ষতার উদাহরণ। ভারত পরীক্ষাগুলি করায় বিশ্ব স্তম্ভিত হয়েছিল এবং কোনও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল। যে কোনও সাধারণ নেতা বেঁকে বসতে পারতেন, কিন্তু অটলজি অন্য ধাতুতে তৈরি হয়েছিলেন। ভারত দৃঢ় ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল এবং দু'দিন পরে, ১৩ ই মে আরও এক দফা পরীক্ষা হয়। ১৩ তারিখের সেই পরীক্ষায় সত্যিকারের নেতৃত্বের পরিচয় পাওয়া যায়। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও, বাজপেয়ীজির তৎকালীন এনডিএ সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্যে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছিল। একই সাথে বিশ্ব শান্তির শক্তিশালী প্রবক্তা ছিলেন তিনি।'