শুক্রবার (৩ জানুয়ারি, ২০২৪) বিকেলে ভারত সরকারের বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে 'ডিজিট্যাল পার্সোনাল ডাটা প্রোটেকশন রুলস' (ব্যক্তিগত ডিজিট্যাল তথ্যভাণ্ডার নীতিসমূহ)-এর খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অগস্ট মাসে এই সংক্রান্ত একটি আইন ঘোষণা করা হয়। তার প্রায় দেড় বছর পর এই খসড়া প্রকাশ করা হল। যাতে আমজনতা এই বিষয়ে নিজেদের মতামত জানাতে পারে।
আগামী দিনে এই নীতিগুলির উপর নির্ভর করেই ভারতের 'ডিজিট্যাল পার্সোনাল ডাটা প্রোটেকশন অ্যাক্ট' (ব্যক্তিগত ডিজিট্যাল তথ্যভাণ্ডার আইন বা ডিপিডিপিএ) কার্যকর করা হবে।
২০১১ সাল থেকেই এই আইন নির্মাণ ও কার্যকর করার কাজ চলছে। এর জন্য সেই বছরই দিল্লি হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এ পি শাহের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ দল গঠন করা হয়। এই বিশেষজ্ঞ দল ভারতে ডিজিট্যাল তথ্যভাণ্ডারের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করতে একটি নির্দিষ্ট আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দেয়।
এরপর ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের ৯ বিচারপতির একটি বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে রায় দেয়, ভারতীয় সংবিধান অনুসারে, প্রত্যেক নাগরিকেরই গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার রয়েছে। এই সমস্ত প্রস্তাব ও শীর্ষ আদালতের রায়ের উপর নির্ভর করেই সংশ্লিষ্ট খসড়া নীতিটি প্রস্তুত করা হয়েছে।
এই খসড়ায় যেসমস্ত প্রস্তাব রয়েছে, তার মধ্য়ে অন্যতম হল - কী ধরনের ডাটা বা ডিজিট্যাল তথ্যভাণ্ডার দেওয়া এবং গ্রহণ করা হচ্ছে, তা সার্ভিস প্রোভাইডার বা পরিষেবা প্রদানকারীকে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। এবং সেক্ষেত্রে যদি কোনওভাবে তথ্য ফাঁস হওয়া, বা অ্য়াকাউন্ট হ্য়াক হওয়ার মতো ঘটনা ঘটে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে সেই বিষয়ে ইন্টারনেট ইউজার বা গ্রাহককে সতর্ক করতে হবে।
এছাড়াও, যে ইন্টারনেট ইউজারদের বয়স ১৮ বছরের কম, তারা যখন ব্যক্তিগত তথ্যভাণ্ডার সংক্রান্ত পরিষেবা পেতে লগ ইন করবে, সেক্ষেত্রে তাদের অভিভাবকের সম্মতি নিতে হবে বলেও সংশ্লিষ্ট খসড়ায় প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
সমস্ত ধরনের ডিজিট্যাল পরিষেবা ও যাবতীয় ডিজিট্যাল কর্মকাণ্ডকেই এই খসড়ার অধীনে আনা হয়েছে। যা আইনে পরিণত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কার্যকর হয়ে যাবে। শুধুমাত্র যেগুলির ক্ষেত্রে নির্দেশিকা, বিজ্ঞপ্তি বা সম্মতি নেওয়ার প্রয়োজন, সেগুলি পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে কার্যকর করা হবে। পুরো বিষয়টি 'ডাটা প্রোটেকশন বোর্ড' বা ডিপিবি-র অধীনস্ত থাকবে।
আমজনতা চাইলে এই খসড়া নিয়ে নিজেদের মতামত জানাতে পারে। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্য়ে মাইগভ পোর্টালের মাধ্যমে এই মতামত দেওয়া যাবে।
এই আইন কার্যকর হওয়ার পর ডিপিবি-র হাতে যেকোনও দেওয়ানি আদালতের সমতুল্য ক্ষমতা প্রদান করা হবে। এবং যদি কখনও ব্যক্তিগত ডিজিট্যাল তথ্যভাণ্ডার সংক্রান্ত কোনও অপরাধের ঘটনা ঘটে, সেক্ষেত্রে দোষ প্রমাণে ২৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত আর্থিক জরিমানা করার অবকাশ থাকবে।