পহেলগাঁও হামলার জেরে দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যেই ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কঠোর পদক্ষেপ করেছে! যার মধ্যে সিন্ধু জল চুক্তি রদ (ফ্রিজ) করা অন্যতম।তথ্যাভিজ্ঞ মহলের বিশ্লেষণ অনুসারে, ভারত চাইলে সিন্ধু নদের উপর বাঁধ নির্মাণ করে নদীর গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। সেই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই ভারতকে ফের একবার হুঁশিয়ারি দিলেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খোয়াজা আসিফ। তাঁর হুমকি, যদি ভারত সিন্ধুর জল আটকানোর জন্য বাঁধ নির্মাণ করে, তাহলে পাকিস্তান তা ধ্বংস করে দেবে!একটি সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এই প্রসঙ্গে বলেন, ভারত যদি এমন কোনও পদক্ষেপ করে, তাহলে তা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় আগ্রাসন হিসাবে বিবেচিত হবে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ভারত যদি সিন্ধু অববাহিকায় বাঁধ নির্মাণের প্রস্তুতি নেয়, তাহলে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া কী হবে?এর জবাবে খোয়াজা আসিফ বলেন, 'এটি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন হিসাবে গণ্য করা হবে। আক্রমণ শুধুমাত্র কামান ও গুলি দিয়েই হয় না। জল আটকানো বা জলের (নদীর) গতিপথ পরিবর্তন করাও পাকিস্তানের উপর আক্রমণ! তারা (ভারত) যদি এই ধরনের কোও চেষ্টা করে, তাহলে পাকিস্তান সেই পরিকাঠামো ধ্বংস করে দেবে!'উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিন ধরেই ভারতকে তথাকথিত চাপে রাখতে গিয়ে পাকিস্তানের এই মন্ত্রী বেফাঁস মন্তব্য করে যাচ্ছেন। সাধ্য মতো হুমকি, হুঁশিয়ারিও দিচ্ছেন!প্রসঙ্গত, জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই ঘটনায় ইতিমধ্যেই সরাসরি পাক যোগের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এনআইএ যে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা করেছে, তাতেও একথা উল্লেখ করা হয়েছে। তথ্যাভিজ্ঞ মহলের দাবি, পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা তাদের ছায়া সংগঠন টিআরএফ-এর মাধ্যমে এই কাপুরুষোচিত হামলা চালিয়েছে।এর জবাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একের পর এক কূটনৈতিক, আর্থিক চাপ বাড়িয়ে চলেছে ভারত। ইতিমধ্যেই ভারতে পাকিস্তানের বহু সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, আজ (শনিবার - ৩ মে, ২০২৫) ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের ডাক ও পার্সেল পরিষেবা বন্ধ করার কথা ঘোষণা করেছে।উলটো দিকে, পাকিস্তান শনিবার ঘোষণা করেছে, তারা ৪৫০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম 'আবদালি অস্ত্র ব্যবস্থা'র সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে। পাক সেনাবাহিনী সূত্রে জারি করা এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, 'এই উৎক্ষেপণের উদ্দেশ্য ছিল সৈন্যদের অভিযানের প্রস্তুতি নিশ্চিত করা এবং ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত ন্যাভিগেশনব্যবস্থা এবং উন্নত গতি-সহ গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত মানদণ্ডগুলি পরীক্ষা করা।'দাবি করা হচ্ছে, এই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণটি 'অনুশীলন ইন্ডাস'-এর অংশ ছিল। উৎক্ষেপণস্থলে পাক সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্তারা উপস্থিত ছিলেন বলেও জানা গিয়েছে।