আরও ৬০ জন সাধারণ নাগরিককে কারাদণ্ডের সাজা শোনাল পাকিস্তানের সেনা আদালত। বৃহস্পতিবার এই রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
কোন ঘটনার জেরে একসঙ্গে এতজনকে সাজা দেওয়া হল?
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, গত বছর গ্রেফতার করা হয় প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে। তারই প্রতিবাদে দেশজুড়ে কার্যত তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ ওঠে ইমরানের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটে ২০২৩ সালে ৯ মে।
পাকিস্তানের দাবি, সেই সময় সেনাবাহিনীর অনেক সম্পত্তি নষ্ট করা হয়েছিল। সেই সম্পদহানির ঘটনাতেই সংশ্লিষ্ট ৬০ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। বৃহস্পতিবার তাঁদের সাজা ঘোষণা করা হয়। সাজা হিসাবে ২ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত হাজতবাসের নিদান দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এই সাজা ঘোষণা করার কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানের ওই একই আদালতে একই কারণে আরও ২৫ জন অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে একইভাবে কারাবাসের শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। তাঁদেরও শাস্তির মেয়াদ ছিল ২ বছর থেকে ১০ বছর পর্যন্ত।
সাজাপ্রাপ্তদের তালিকায় ইমরান খানের ভাইপো:
লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, এবার যাঁদের বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করা হয়েছে, সেই তালিকায় ইমরান খানের ভাইপো হাসান খান নিয়াজি পর্যন্ত রয়েছেন। এবার যে দু'জনকে আদালত ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে, তাঁদের মধ্যে একজন হলেন এই হাসান। উল্লেখ্য, হাসানকে ২০২৩ সালের অগস্ট মাসে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল পাক সেনাবাহিনী।
প্রসঙ্গত, সাধারণত সাধারণ নাগরিকদের কোনও অপরাধের বিচার সেনা আদালত করে না। কিন্তু, এক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম ঘটেছে। কারণ, ২০২৩ সালের ৯ মে পাকিস্তানে যে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছিল, শুধুমাত্র সেই ঘটনায় সেনা আদালত ৮৫ জন অভিযুক্তকে সাজা শোনাতে পারবে বলে রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।
নির্দিষ্ট কয়েকটি শর্তের বিনিময়ে এই অনুমতি সেনা আদালতকে প্রদান করেছিল পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের সেই রায়দানের পরই পর-পর দুই দফায় দোষী ৮৫ জনের শাস্তি ঘোষণা করল পাকিস্তানের ওই সেনা আদালত।
বৃহস্পতিবারের ওই রায় ঘোষণার পর সেনাবাহিনীর প্রেস উইং (ইন্টার-সার্ভিস পাবলিক রিলেশন)-এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ফিল্ড জেনারেল কোর্ট মার্শাল এই রায় ঘোষণা করেছেন। এদিন বাকি ৬০ জন দোষী ব্যক্তির সাজা ঘোষণা করা হয়েছে।
সেনার দাবি, সমস্ত তথ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখে এবং দোষী ব্যক্তিদের প্রাপ্য সমস্ত আইনি অধিকার রক্ষা করেই এই রায় ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে, সেনার তরফে এও জানানো হয়েছে, সংবিধান অনুসারে, প্রত্যেক সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিই পুনরায় তাঁদের আপিল রুজু করতে পারবেন।