বিমা ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআই-এর ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর কথা ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
শনিবার সংসদে পেশ করা কেন্দ্রীয় বাজেট বক্তৃতায় মন্ত্রী জানান, বিমা ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআই-এর ঊর্ধ্বসীমা ৭৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০০ শতাংশ করা হচ্ছে। সরকারের যুক্তি, এর ফলে এফডিআই নিয়ে ইতিবাচক বার্তা যেমন দেওয়া হবে, তেমনই ঘরোয়া অর্থনীতি পরিষেবাগুলি আরও উন্নত হবে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ সময় ধরেই ভারতের বিমা বাজারে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করছিল নানা মহল। তাদের বক্তব্য ছিল, তাহলে ভারতে বিনিয়োগ করার বিষয়ে আরও বেশি উৎসাহিত হবেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। তাতে আখেরে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হবে।
দীর্ঘদিনের সেই চাহিদা ও দাবিকে স্বীকৃতি দিয়েই এবার বিমা ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বসীমা সর্বোচ্চ করার কথা ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তবে, এক্ষেত্রে সরকারের তরফে কিছু পছন্দ, অপছন্দ ও শর্ত আরোপ করা হয়েছে।
যেমন - সরকারের তরফে মূলত সেইসব সংস্থাগুলির ক্ষেত্রেই এফডিআই-এর ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো হবে, যারা তাদের কিস্তিবাবদ উপার্জনের সবটুকুই শুধুমাত্র ভারতে বিনিয়োগ করবে।
তাছাড়াও, এই ঘোষণা করামাত্রই কার্যকরা করা সম্ভব নয়। তার জন্য আইনে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। গত শীতকালীন অধিবেশনেই বিমা সংশোধনী বিল সংসদে পেশ করার কথা ছিল। কিন্তু, সেই কাজ করা হয়নি।
ওই বিল আইনে পরিণত হলে বিশ্বের অন্য়ান্য দেশের বিনিয়োগকারীরা স্বাধীনভাবে ভারতের বাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে। পাশাপাশি, এককভাবে কাজ করা ইনসিওরেন্স এজেন্টরাও একাধিক সংস্থার পলিসি বিক্রি করতে পারবেন। যেখানে বর্তমানে তাঁরা একটি সংস্থার সঙ্গেই কাজ করার সুযোগ পান।
কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, তাদের লক্ষ্য়মাত্রা হল - ২০৪৭ সালের মধ্য়েই দেশের প্রত্যেক নাগরিকের কাছে বিমার সুবিধা পৌঁছে দেওয়া। সংশ্লিষ্ট বিমা সংশোধনী বিল আইনে পরিণত হলে সেই লক্ষ্য়ে অনেকটাই এগোনো সম্ভব হবে।
বর্তমানে ভারতের বিমা ক্ষেত্রে ২৪টি জীবন বিমা সরবরাহকারী সংস্থা, ২৬টি সাধারণ বিমা সরবরাহকারী সংস্থা, ছ'টি একক স্বাস্থ্যবিমা সরবরাহকারী সংস্থা রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে জেনারেল ইনসিওরেন্স কর্পোরেশন। বর্তমানে বিমা সংস্থাগুলিতে সর্বোচ্চ ৭৪ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআই-এর ছাড়পত্র রয়েছে।
সরকারের আশা, এফডিআই-এর ঊর্ধ্বসীমা ১০০ শতাংশ হয়ে গেলে বাজারে নতুন বিমা সংস্থা চালু হবে। তাতে প্রতিযোগিতা এবং তার ফলস্বরূপ পরিষেবার মান বাড়বে। সর্বোপরি দেশের আর্থিক উন্নতি হবে।