১৯৬২ সালে প্রতিবেশী রাষ্ট্র চিন হামলা চালিয়েছিল। সেই আক্রমণের পরই খালি করে দেওয়া হয়েছিল দু'টি গ্রাম। তারপর কেটে গিয়েছে ৬০ বছরেরও বেশি সময়। এত বছর ধরে সেই গ্রাম দু'টি জনশূন্যই থেকে গিয়েছে। কিন্তু, এবার উত্তরাখণ্ডের সীমান্তবর্তী সেই গ্রাম দু'টিকেই পুনর্নির্মাণ করা হবে। আজ (বৃহস্পতিবার - ৬ মার্চ, ২০২৫) নিজে একথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।এদিন প্রধানমন্ত্রী মোদী উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী সফরে এসেছিলেন। এখানে তিনি দেবী গঙ্গার শীতকালীন বাসস্থান হিসাবে পরিচিত (ভক্তদের বিশ্বাস অনুসারে) মুখোয়ায় পূজার্চনা করেন এবং পরে হর্ষিলে আয়োজিত একটি জনসভায় বক্তৃতা দেন। এদিনের এই মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদী উত্তরাখণ্ড পর্যটনের উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেন। যার মধ্যে অন্যতম হল - সীমান্তবর্তী সংশ্লিষ্ট দু'টি গ্রামের পুনর্গঠন।প্রধানমন্ত্রী মোদী এই প্রসঙ্গে বলেন, '১৯৬২ সালে চিন যখন ভারতে আক্রমণ করেছিল, তখন দু'টি গ্রাম খালি করে দেওয়া হয়েছিল। ৬০-৭০ বছর হয়ে গিয়েছে। মানুষ ভুলে গিয়েছে, কিন্তু আমরা ভুলতে পারি না। আমরা সেই দু'টি গ্রাম পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। একটি বৃহৎ পর্যটনকেন্দ্র তৈরির দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।' প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও জানিয়েছেন, ‘উত্তরাখণ্ডে পর্যটকদের সংখ্যা গত এক দশকে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অর্থনৈতিক মন্দা দূর করার জন্য বর্ষব্যাপী পর্যটনের উপর জোর দিয়েছেন। যাতে সারাবছরই উত্তরাখণ্ডে পর্যটকরা আসেন এবং ব্যবসা জমে ওঠে, যাতে বছরের প্রতিটি ঋতুই 'পর্যটনের মরশুম' হিসাবে বিবেচিত হয়।প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'উত্তরাখণ্ডের জন্য পর্যটন ক্ষেত্রকে বৈচিত্র্যময় এবং বর্ষব্যাপী করে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।' মোদী আরও বলেছেন যে তিনি চান, উত্তরাখণ্ডে কোনও ঋতুই আর পর্যটনের ক্ষেত্রে 'অফ সিজন' থাকবে না এবং প্রতিটি ঋতুই হবে 'অন সিজন'। অর্থাৎ - সারাবছরই উত্তরাখণ্ডে পর্যটকদের ঢল থাকবে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে পাহাড়ে মূলত মার্চ, এপ্রিল এবং জুন মাসেই অধিক সংখ্যক পর্যটক বেড়াতে আসেন। কিন্তু, তারপর তাঁদের সংখ্যা কমে যায়। মোদী বলেন, 'শীতকালে হোম স্টে এবং হোটেলগুলি খালি থাকে। এর ফলে উত্তরাখণ্ডে বছরের একটি দীর্ঘ সময় ধরে অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হয়।'মোদী এই প্রসঙ্গ টেনেই সরকারের ভাবনার কথা জানান। বলেন, যদি শীতকালেও দেশ-বিদেশের মানুষ এই রাজ্যে বেড়াতে আসেন, তাহলে তাঁরা উত্তরাখণ্ডের প্রকৃত সৌন্দর্য দেখতে পাবেন। এবং তাঁরা ট্রেকিং ও স্কিয়িং-মতো অ্যাডভেঞ্চার উপভোগ করতে পারবেন।মোদী আরও বলেন, শীতকালে উত্তরাখণ্ডের রোদ অনন্য! যখন সমতল এলাকায় কুয়াশা থাকে! তিনি কর্পোরেট জগতের কাছেও আবেদন করেছেন যাতে তারা শীতকালে তাদের মিটিং, বৈঠক, সম্মেলনগুলি উত্তরাখণ্ডে আয়োজিত করার বন্দোবস্ত করে।