বেশ কিছু দিন ধরেই শোনা যাচ্ছে, মণিপুরের প্রধান শাসকদল বিজেপির অন্দরে নাকি সবকিছু ঠিকঠাক নেই। তার কারণ, দলেরই কিছু বিধায়ক নাকি মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংকে নিয়ে খুশি নন। সেই জল্পনার মধ্যেই বুধবার রাজধানী দিল্লি পৌঁছে গেলেন বীরেন। পিছন-পিছন গেলেন রাজ্যের মন্ত্রীরা এবং আরও কয়েকজন বিধায়ক।
নির্ভরযোগ্য সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, রাজধানী যেতে বুধবার দুপুর ২টো নাগাদ ইন্ডিগোর একটি (সরাসরি) উড়ান ধরেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বিমান উড়ান শুরু করার কিছুক্ষণ পরই দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেয় আরও একটি চাটার্ড বিমান। সেই বিমানে সওয়ার ছিলেন সাতজন বিধায়ক এবং চারজন বিজেপি নেতা।
সূত্র মারফত আরও জানা গিয়েছে, এদিন যাঁরা দিল্লি রওনা দিয়েছিলেন, সেই যাত্রীদের তালিকায় ছিলেন মণিপুরের তিনজন ক্যাবিনেট মন্ত্রী। এঁরা হলেন - টিএইচ বিশ্বজিৎ সিং, কোনথুজাম গোবিন্দদাস এবং এল সুসিন্দ্র মেইতেই।
এছাড়াও, যাত্রী তালিকায় থাকা আরও চার বিধায়ক হলেন - খোংবান্তাবাম ইবোমচা সিং, সপম কুঞ্জকিশোর সিং, করণ শ্যাম সিং এবং এস প্রেমচন্দ্র।
দিল্লি সফরের এই পর্বের সঙ্গে নাম জড়িয়েছে আরও চারজনের। তাঁরা হলেন - রবার্টসন আসেম, গাসেপম রামচন্দ্র, এসএইচ দোনিল শর্মা এবং এ মুনিন্দরজিৎ সিং।
ইতিমধ্যে সূত্র মারফত নিশ্চিত খবর পাওয়া গিয়েছে, বিজেপি বিধায়ক টিএইচ রাধেশ্যাম এবং ক্যাবিনেট মন্ত্রী ওয়াই ক্ষেমচাঁদ সিং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কার্যালয়ে পৌঁছে গিয়েছেন। সেখানে তাঁরা একটি বৈঠকের অপেক্ষায় রয়েছেন।
উল্লেখ্য, রাধেশ্যাম এবং ক্ষেমচাঁদ গত কয়েক দিন ধরেই দিল্লিতে রয়েছেন। কারণ, এই দুই বিজেপি বিধায়ককে অমিত শাহ স্বয়ং ডেকে পাঠিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
সূত্রের দাবি, মণিপুরের জাতি দাঙ্গার ফলে বিজেপি বিধায়কদের কী কী সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে, এবং তাঁদের কী কী অভিযোগ রয়েছে, সেই বিষয়গুলি নিয়েই শাহের সঙ্গে কথা বলতে পারেন ক্ষেমচাঁদ। খুব সম্ভবত তাঁদের মধ্যে বৃহস্পতিবার একটি বৈঠক হতে পারে।
এদিকে, মণিপুরের রাজ্যপাল অজয় কুমার ভাল্লাও দিল্লি রওনা দিয়েছেন। যদিও তাঁর এই সফরের কারণ নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।
অন্যদিকে, বুধবার মণিপুর কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী সভাপতি কে দেবব্রত সিং দাবি করেন, বিজেপির একাধিক বিধায়ক নাকি মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের বিপক্ষে চলে গিয়েছেন।
দেবব্রত বলেন, 'এটা কোনও গুজব বা রটনা নয়। সত্যিই এমনটা হয়েছে।' তাঁর আরও দাবি, আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগেই যাতে বিক্ষুব্ধদের বুঝিয়ে সুজিয়ে শান্ত করা যায়, স্বয়ং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেই চেষ্টা করছেন। যাতে বিজেপি নেতৃ্ত্বাধীন সরকার রাজ্যে টিকে থাকতে পারে।