২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইজরায়েলের মাটিতে হামাসের হামার জেরে ক্ষতি হয়েছে ইরানের। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের মঞ্চ থেকে এমনই ইঙ্গিত করলেন সেই দেশের উপরাষ্ট্রপতি (স্ট্র্যাটেজিক অ্যাফেয়ার) মহম্মদ জাভিদ জারিফ। তাঁর কথায়, ইজরায়েলের মাটিতে হামাসের হামলার জেরে ইরানের পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনার পথ বন্ধ হয়ে যায়। এই আবহে জাভিদ জারিফ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে আবেদন করেন যাতে ফের ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করে আমেরিকা। তাঁর কথায়, 'আশা করছি ট্রাম্প ২.০ আরও বেশি গুরুত্ব দেবে বিষয়টির ওপরে।' (আরও পড়ুন: নাক কাটল পাকিস্তানের, সন্ত্রাসবাদ নিয়ে পর্দা ফাঁস করে রিপোর্ট 'বন্ধু' তালিবানের)
আরও পড়ুন: সেক্সে 'হ্যাঁ' মানে কি গোপন মুহূর্তের ভিডিয়ো করারও সম্মতি? কি বলল হাই কোর্ট?
উল্লেখ্য, হামাসের হামলার জেরে বিগত কয়েকমাস ধরে গাজায় বিধ্বংসী যুদ্ধ চলেছে। এরই মাঝে ইরানের সাহায্যপ্রাপ্ত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির সঙ্গেও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল ইজরায়েল। এমনকী বেনজির ভাবে ইরান এবং ইজরায়েল একে অপরের ভূখণ্ডে সরাসরি মিসাইল হামলা পর্যন্ত করে দিয়েছিল এই যুদ্ধ চলাকালীন। যার জেরে গোটা মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি খুবই বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিল। যার প্রভাব পড়েছিল বিশ্ব অর্থনীতির ওপরেও। এর আগে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে হামাসের প্রশংসা করেছিল ইরান। তবে সেই হামলার সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই বলেও বারংবার দাবি করে এসেছিল তেহরান। উল্লেখ্য, হামাসকেও অর্থনৈতিক এবং সামরিক ভাবে সাহায্য করে থাকে ইরান।
এই আবহে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের মঞ্চে জারিফ বলেন, '৭ অক্টোবরের সেই হামলার বিষয়ে আমরা জানতাম না। আমাদের তো ৯ অক্টোবর মার্কিনিদের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনায় বসার কথা ছিল। তবে ৭ অক্টোবরের অভিযানের কারণে আমাদের সেই বৈঠক ভেস্তে যায়।' এরপর জারিফ আরও বলেন, 'মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের সঙ্গীরা সবসময় নিজেদের স্বার্থে লড়াই চালিয়ে গিয়েছে। হামাসও তাই করেছে। অনেক ক্ষেত্রেই তাদের এই কর্মকাণ্ডে আমাদের ক্ষতি হয়েছে। এই অঞ্চলে আমাদের বিনিয়োগ থেকে আমরা কোনও দিন কোনও ফায়দা তোলার চেষ্টা করিনি।' উল্লেখ্য, বর্তমানে ইরানের স্ট্র্যাটেজিক অ্যাফেয়ার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট জারিফ এর আগে ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ইরানের বিদেশমন্ত্রী ছিলেন। ২০১৫ সালে ইরানের পরমাণু চুক্তির জন্যে বিশ্বের সঙ্গে দর কষাকষির দায়িত্ব ছিল তাঁরই ওপরে।
অবশ্য ২০১৮ সালে, নিজের প্রথম মেয়াদে ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে আমেরিকাকে প্রত্যাহার করার ঘোষণা করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর জেরে ইরানের পরমাণু প্রোগ্রামের ওপর ফের বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এদিকে ওয়াশিংটন যতদিন ইরানের পরমাণু চুক্তি মেনে চলেছিল, ইরানও তা অনুসরণ করেছিল। তবে আমেরিকা সেই চুক্তি থেকে নাম প্রত্যাহার করার পরই ইরানও নিজেদের ইচ্ছে মতো কাজ করে গিয়েছে। তবে এরই মাঝে ইরান একাধিকবার সেই চুক্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার পক্ষে আবেদন করে এসেছে। এর আগে সম্প্রতি ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির সঙ্গে এই নিয়ে কথাও বলেছে ইরান।