যে দেশের অর্থনীতি কার্যত 'ভেঙে পড়েছে', এবং অন্য়ান্য দেশের কাছে আর্থিক সাহায্যের জন্য 'ভিক্ষা চাইতে হচ্ছে', সেই দেশ কীভাবে সামরিকবাহিনীর আধুনিকীকরণ করার জন্য টাকার বন্দোবস্ত করতে পারে! এ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করলেন ভারতীয় নৌবাহিনীর চিফ অ্যাডমিরাল দীনেশ ত্রিপাঠী।
আসলে সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে, পাকিস্তানকে সামরিক সরঞ্জাম এবং অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করে সহযোগিতা করছে চিন। আর এখানেই প্রশ্ন তুলেছেন ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রধান। তাঁর বক্তব্য, যে দেশের গোটা অর্থনীতিই কার্যত ধুঁকছে, তাদের কাছে বিদেশি অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম কেনার অর্থ এল কোথা থেকে?
সংবাদ সংস্থা এএনাই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চিফ অ্যাডমিরাল বলেন, পাকিস্তান নৌবাহিনীতে যে ঘটনা ঘটছে, তার উপর তাঁরা সর্বদা নজর রাখছেন।
এই প্রসঙ্গে ভারতীয় নৌবাহিনীর চিফ অ্য়াডমিরাল বলেন, 'আমার মনে হয় এই ঘটনায় উদ্বেগ করার থেকেও বেশি অবাক হওয়ার মতো উপাদান রয়েছে। যে দেশের অর্থনীতি এতটাই ভেঙে পড়েছে, যে তাদের আন্তর্জাতিক মহলের কাছে হাত পাততে হচ্ছে, তারা কীভাবে তাদের সেনাবাহিনীর আধুনিকীকরণের জন্য অর্থ বরাদ্দ করল! এটি সত্যিই অত্যন্ত আশ্চর্যজনক ঘটনা।'
এরপরই নৌসেনা প্রধান বলেন, 'পাকিস্তানের নৌবাহিনীতে যে ঘটনা ঘটে চলেছে, আমাদের সেদিকে নজর রয়েছে। বিভিন্ন উৎস থেকে তারা কী ধরনের অস্ত্র এবং সুবিধা পাচ্ছে, সেদিকে আমাদের নজর রয়েছে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের জলভাগে যাতে আমাদের নিরাপত্তা অক্ষুণ্ণ থাকে এবং জলভাগে আমাদের আন্তর্জাতিক সুরক্ষা যাতে কোনও কারণেই বিঘ্নিত না হয়, আমরা সেদিকেও খেয়াল রাখছি।'
পাকিস্তান যেভাবে চিনের কাছ থেকে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম পাচ্ছে, তা নিয়ে নৌসেনা প্রধানকে প্রশ্ন করা হয়েছিল।
জবাবে তিনি বলেন, 'চিনের কথা যদি বলতে হয়, তাহলে একথা মানতেই হবে যে সংখ্যার বিচারে তাদের কাছেই বৃহত্তম নৌবাহিনী রয়েছে। এবং আমরা সেই সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত রয়েছি। আমরা এই বিষয়টাতেও সবসময় নজর রাখছি।'
নৌসেনা প্রধান আরও জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে ভারতের বিভিন্ন জাহাজ নির্মাণ কেন্দ্রে ৬৩টি জাহাজ নির্মাণ করা হচ্ছে। এই কাজে বিভিন্ন বেসরকারি নির্মাণ সংস্থাও যুক্ত রয়েছে।
ভারতীয় নৌসেনার আত্মনির্ভর হওয়ার লক্ষ্য পূরণ প্রসঙ্গে চিফ অ্য়াডমিরাল বলেন, '২০৪৭ সালের মধ্যেই ভারতীয় নৌসেনা সম্পূর্ণভাবে আত্মনির্ভর হয়ে যাবে।'
তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানান, ভবিষ্যতে এমন একটি সময় আসবে, যখন ভারতকে আর যুদ্ধ প্রযুক্তি বা সামরিক সরঞ্জাম বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে না। বরং, সমস্তটাই এই ভারতের মাটিতে নির্মাণ করা হবে।