সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত মন্দির মসজিদ বিবাদ বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। ধর্মীয় হিংসার বদলে সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছেন তিনি। সতর্ক করেছেন উঠতি হিন্দুত্ববাদী নেতাদের। এনিয়ে এবার তীব্র আপত্তি জানালেন সাধু ও সন্ন্যাসীরা। ঋষি ও সাধুদের সংগঠন অখিল ভারতীয় সন্ত সমিতি (এবিএসএস) মোহন ভাগবতের এই মন্তব্যে বিরক্তি প্রকাশ করেছে এবং এই ধরনের মন্তব্য করা থেকে ভাগবতকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। এবিএসএস-এর সাধারণ সম্পাদক স্বামী জিতেন্দ্রানন্দ সরস্বতী বলেছেন, এই ধরনের ধর্মীয় বিষয়ে ধর্মীয় নেতাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, আরএসএস-এর মতো কোনও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নয়।
আরও পড়ুন: দেশজুড়ে মসজিদের নীচে মন্দির খোঁজা হচ্ছে, ভারতে এটা ‘গ্রহণযোগ্য নয়’: মোহন ভাগবত
জিতেন্দ্রানন্দ সরস্বতী মোহন ভাগবতের তীব্র বিরোধিতা করে বলেন, ‘যখন ধর্মের বিষয় আসবে তখন ধর্মগুরুদের সিদ্ধান্ত নিতে দেওয়া উচিত এবং তারা যা সিদ্ধান্ত নেবে তা সংঘ এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদ মেনে নেবে।’ এর আগে জগদগুরু রামভদ্রাচার্যও মোহন ভাগবতের বক্তব্যকে তোষণ বলে অভিহিত করেছিলেন এবং বলেছিলেন, ‘তিনি (ভাগবত) হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে কিছুই জানেন না।’
জ্যোতিষপীঠের শঙ্করাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দও সংঘ প্রধানের সমালোচনা করেন। তাঁর বক্তব্য, রাজনৈতিকভাবে সুবিধা নেওয়ার জন্য ভাগবত এই ধরনের মন্তব্য করেছেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, স্বামী জিতেন্দ্রানন্দ সরস্বতী বলেছেন, ‘ভাগবত আগেও এই ধরনের বিবৃতি দিয়েছিলেন এবং এখনও ৫৬টি নতুন জায়গায় মন্দিরের কাঠামো চিহ্নিত করা হয়েছে। মানুষ এটি সম্পর্কে আগ্রহী। ধর্মীয় সংগঠনগুলি রাজনৈতিক এজেন্ডার ভিত্তিতে নয়, জনমতের ভিত্তিতে কাজ করে।’ উল্লেখ্য, এই প্রথম ধর্মীয় নেতা এবং ধর্মীয় সংগঠনগুলি সংঘ প্রধানের কথায় এত তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
সম্বলের মসজিদ-মন্দির বিবাদের মধ্যে ভাগবত গত সপ্তাহে সহজীবন বক্তৃতা সিরিজে বলেছিলেন, ‘রাম মন্দির নির্মাণের পরে, কিছু লোক মনে করেন যে তারা নতুন জায়গায় একই রকম ইস্যু তুলে হিন্দুদের নেতা হতে পারে।’ তিনি বলেছিলেন, ‘রাম মন্দির হিন্দুদের আস্থার বিষয় ছিল, তাই মন্দির তৈরি হয়েছিল। কিন্তু, প্রতিদিন একটি নতুন ইস্যু উঠে আসছে। এটি গ্রহণযোগ্য নয় এবং অনুমতি দেওয়া যাবে না।’ তিনি সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে বলেছিলেন, ‘ভারতকে দেখাতে হবে যে আমরা একসঙ্গে থাকতে পারি। আমরা দীর্ঘদিন ধরে সৎ বিশ্বাসে একসাথে বসবাস করছি। আমরা যদি বিশ্বকে এই সদিচ্ছা দিতে চাই তবে আমাদের এটিকে মডেল করতে হবে।’
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবতের বক্তব্য, যে কিছু লোক মন্দির-মসজিদ সংক্রান্ত ইস্যু তুলেছে যাতে তারা নিজেদেরকে হিন্দুদের বড় নেতা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন। এ বিষয়ে রামভদ্রাচার্য বলেন, এটা তাঁর ব্যক্তিগত বক্তব্য। হতে পারে তিনি সঙ্ঘের।নেতা কিন্তু, হিন্দু ধর্মের নন।