মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের তিনটি প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রে ক্ষতি হওয়ার পর সে দেশের ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ প্রায় ৪০০ কেজি ইউরেনিয়ামের অস্তিত্ব ঘিরে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স জানিয়েছেন, 'আমাদের উদ্দেশ্য ছিল ইউরেনিয়ামকে মাটি চাপা দেওয়া এবং আমি মনে করি আমরা তা করতে পেরেছি।' অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলিতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে 'সন্দেহ' করছে ইজরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ)।
ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ইউরেনিয়াম ভাণ্ডার ধ্বংসের পাশাপাশি তাদের এটিকে পারমাণবিক অস্ত্রে রূপান্তরের সক্ষমতাও ধ্বংস করতে চেয়েছিল।তাঁর কথায়, 'সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার ক্ষমতা পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে কিনা। তবে একথা নিশ্চিত, ইরানকে স্পষ্ট বার্তা পাঠানো হয়েছে—আমাদের বিমান যে কোন সময় তাদের ভূখণ্ডে পৌঁছাতে পারে।'
এই মুহূর্তে ইরানের যে সব ইউরেনিয়াম রয়েছে, সেগুলি ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ। যদিও অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজন ৯২ শতাংশ মাত্রার শুদ্ধতা। তবু বিশেষজ্ঞরা বিষয়টিকে উদ্বেগজনক মনে করছেন।
আরও পড়ুন-যুদ্ধবিরতি খারিজ করার পরেই ইউটার্ন ইরানের! আশার আলো মধ্যপ্রাচ্যে?
তবে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রোসি বলেন, ফোরদো সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রে কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা এখনও নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। এই সকেন্দ্রটি গভীরভাবে ভূগর্ভস্থ হওয়ায় পরিদর্শন কঠিন হয়ে পড়েছে। ওপেন-সোর্স স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ফোরদোর বাইরে প্রায় এক ডজন ট্রাক দাঁড়িয়েছিল। নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দুজন ইজরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মার্কিন হামলার আগেই ইরান উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ইউরেনিয়াম ও সরঞ্জাম সরিয়ে নিয়েছিল। ইরান হামলার পর জানায়, ওই সব কেন্দ্রে এমন কোন উপাদান ছিল না যা রেডিয়েশন সৃষ্টি করতে পারে।
আরও পড়ুন-যুদ্ধবিরতি খারিজ করার পরেই ইউটার্ন ইরানের! আশার আলো মধ্যপ্রাচ্যে?
হামলার পর এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভ্যান্স বলেন, 'আমরা ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করছি না… আমরা যুদ্ধ করছি ইরানের পরমাণু কর্মসূচির বিরুদ্ধে।' তবে তিনি এই হামলায় ইরানের পরমাণু কেন্দ্র পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত করেননি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে প্রাপ্ত ‘সংবেদনশীল গোয়েন্দা তথ্য’ প্রকাশ করতে চান না বলেও জানান তিনি। তবে তিনি আশাবাদী যে, এই হামলা ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টাকে 'গুরুত্বপূর্ণভাবে বিলম্বিত' করেছে, এবং সেটাই ছিল মূল লক্ষ্য।