আগেই দলত্যাগ করে বিজেপিকে ধাক্কা দিয়েছিলেন কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা লিঙ্গায়াত সম্প্রদায়ের অন্যতম জনপ্রিয় নেতা জগদীশ শেটার। বিজেপি ত্যাগের পর থেকেই তাঁর কংগ্রেসে যোগ নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছিল। কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতারা গিয়ে জগদীশ শেটারের সঙ্গে দেখাও করে আসেন। এরপর আজ সেই জল্পনা সত্যি প্রমাণিত হল। আজ কর্ণাটক প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমার এবং দলের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গের উপস্থিতিতে হাত শিবিরে নাম লেখান প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক। এর আগে গতকালই বেঙ্গালুরুতে নিজের বাসভবনে জগদীশের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা, শিবকুমার এবং কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। সেখানে কংগ্রেসে যোগ দেওয়া নিয়ে নিজের 'শর্ত' স্পষ্ট করেন জগদীশ। সেই কথাবার্তা চূড়ান্ত হতেই আজ কংগ্রেসে যোগ দিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত পরশু জগদীশ দলত্যাগের ঘোষণা করার আগে মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী এবং ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করেন জগদীশ শেটার। শনিবার রাতে এই তিনজন জগদীশের বাসভবনে যান। তবে সেই বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ার পরই দল ছাড়ার ঘোষণা করেন জগদীশ। পাশাপাশি এও জানিয়ে দেন তিনি এই নির্বাচনে লড়বেন। তবে তখনও তিনি অন্য কোনও দলে যোগ দেওয়ার কথা বলেননি। তবে তাঁর কংগ্রেসে যোগদানের সম্ভাবনা প্রবল হচ্ছিল। প্রসঙ্গত, জগদীশের বিজেপি ত্যাগের মাত্র একদিন আগেই কর্ণাটকের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী লক্ষ্মণ সাভাদি বিজেপি থেকে পদত্যাগ করে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। আর এবার সেই একই পথে হাঁটলেন জগদীশ।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ছিলেন জগদীশ শেটার। এর আগে ২০১২ সালে একবছরের জন্য কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও কর্ণাটক বিধানসভার স্পিকার পদ সামলেছেন তিনি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দফতরের দায়িত্বেও ছিলেন জগদীশ। এহেন হেভিওয়েট লিঙ্গায়াত নেতাকে এবার টিকিট দেয়নি বিজেপি। উল্লেখ্য, বিএস ইয়েদুরাপ্পাও লিঙ্গায়াত সম্প্রদায়ের। কর্ণাটকের সবথেকে বড় সম্প্রদায় এটি। এই সম্প্রদায় বিগত কয়েক দশক ধরে বিজেপিকেই সমর্থন করে এসেছে। জানা গিয়েছে, জগদীশ হুবলি-ধারাওয়াড় সেন্ট্রাল আসন থেকে টিকিট চেয়েছিলেন। তবে বিজেপি তাঁকে নির্বাচনে লড়তে বারণ করে। এতেই 'অপমানিত' হয়ে দল ছাড়েন তিনি। মনে করা হচ্ছি, হুবলির আশেপাশের প্রায় ২০ থেকে ২৫টি আসনে জগদীশের দলবদলের প্রভাব পড়তে পারে। জগদীশের দলত্যাগে যে বিজেপির ওপর প্রভাব পড়বে তা একপ্রকার মেনে নিয়েছিলেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইও।