জানালা দিয়ে পড়ছে থরে থরে ৫০০ টাকার বান্ডিল। শুক্রবার এমনই ছবি দেখা গেল ওডিশার ভুবনেশ্বরে। সেখানে এক সরকারি ইঞ্জিনিয়ারের বাড়িতে হঠাৎ ভিজিল্যান্স হানা দেয়। এদিকে, তল্লাশি অভিযান হতে পারে আঁচ পেয়েছিলেন ইঞ্জিনিয়ার বৈকুণ্ঠনাথ সাড়াঙ্গি। অভিযোগ, ভিজিল্যান্স দফতরের আধিকারিকরা ফ্ল্যাটে পৌঁছোতেই থরে থরে সাজিয়ে রাখা নোটের বান্ডিল জানালা দিয়ে হাত গলিয়ে নীচে ফেলতে শুরু করেন ওই ইঞ্জিনিয়ার।
শুক্রবার আয় বহির্ভূত সম্পত্তির অভিযোগে অভিযানে নেমে চমকে উঠে ভিজিল্যান্স দফতর। ওড়িশা সরকারের গ্রামীণ সড়ক বিভাগের মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার বৈকুণ্ঠনাথ সারঙ্গীর বাড়িতে হানা দিয়ে উদ্ধার হয়েছে নগদ ২ কোটিরও বেশি টাকা ও বিপুল সম্পত্তির দলিলপত্র। সারঙ্গীর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন সম্পত্তি গড়ার অভিযোগ ছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই তার বাড়িতে হানা দেয় ওড়িশা পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা (ভিজিল্যান্স)।কিন্তু তদন্তকারী আধিকারিকদের চোখের সামনে ঘটে অবিশ্বাস্য এক ঘটনা। ভুবনেশ্বরের ফ্ল্যাট থেকে তদন্তকারী দল যখন ঢুকছিল, তখন সারঙ্গী হঠাৎ জানলা খুলে বাইরে ছুড়ে ফেলতে থাকেন ৫০০ টাকার বান্ডিল। পথচলতি মানুষ ও স্থানীয় বাসিন্দারা এমন দৃশ্য দেখে হতবাক। তদন্তকারীদের মতে, এক কোটি টাকারও বেশি নগদ টাকা শুধু এই ফ্ল্যাট থেকেই উদ্ধার হয়েছে।
আরও পড়ুন-'ইলন টেরিফিক', বিদায়ী টেসলা কর্তার ভূয়সী প্রশংসায় ট্রাম্প, তবে যাচ্ছে না জল্পনা
সারঙ্গীর শুধু ভুবনেশ্বরেই নয়, অঙ্গুল, পুরী জেলার পিপলি ও সিউলায় রয়েছে একাধিক সম্পত্তি। ভিজিল্যান্স সূত্রে খবর, অঙ্গুলের কারাদাগাড়িয়া এলাকায় তাঁর দু’তলা বাড়ি থেকেও উদ্ধার হয়েছে নগদ ১.১ কোটি টাকা। সারঙ্গীর পৈতৃক বাড়ি ও আত্মীয়দের বাড়িতেও অভিযান চালানো হয়। তল্লাশি চলে তাঁর অফিস চেম্বার, আরডি প্ল্যানিং অ্যান্ড রোডস ডিভিশন, ভুবনেশ্বরেও।এই তল্লাশি অভিযান পরিচালনার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে ভিজিল্যান্সের ৮ জন ডেপুটি পুলিশ সুপার, ১২ জন ইন্সপেক্টর ও অন্যান্য আধিকারিকদের। অভিযান চালানো হয়েছে বিশেষ ভিজিল্যান্স আদালতের নির্দেশে।
আরও পড়ুন-'ইলন টেরিফিক', বিদায়ী টেসলা কর্তার ভূয়সী প্রশংসায় ট্রাম্প, তবে যাচ্ছে না জল্পনা
এদিকে, স্থানীয় প্রশাসন এবং জনসাধারণের মধ্যে এই ঘটনার কারণে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, সকালে হঠাৎ টিনের চালার উপর জোরে জোরে কিছু পড়ার শব্দ পাচ্ছিলেন তিনি। কী পড়ছিল সেটা দেখার জন্য বেরিয়ে আসতেই দেখেন পাশের ফ্ল্যাটের তিনতলা থেকে টাকার বান্ডিল ফেলছেন কেউ। যদিও এসব করেও কোনও বিশেষ সুবিধা হয়নি। কারণ ভিজিল্যান্স আধিকারিকরা ফ্ল্যাটে পৌঁছোলে ফ্ল্যাটের একটি ঘর থেকে থরে থরে সাজানো টাকার বান্ডিল উদ্ধার হয়। বিপুল পরিমাণ টাকা দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান তদন্তকারী আধিকারিকরাও। টাকা গুনতে নিয়ে আসা হয় যন্ত্র। এছাড়া জানালা দিয়েও নোটের বান্ডিল উদ্ধার করেন তাঁরা।কোথা থেকে কীভাবে এই টাকা ইঞ্জিনিয়ারের কাছে এল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।