১৯৮০ সালের ৬ এপ্রিল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল বিজেপির। তবে দেশের শাসন ব্যবস্থায় গেরুয়া শিবিরের প্রবেশের আগে রয়েছে একগুচ্ছ ঐতিহাসিক ঘটনা। ১৯৫১ সালের জনসংঘ ধীরে ধীরে ১৯৮০ সালে হয়ে ওঠে ভারতীয় জনচা পার্টি। আর আজ সেই পার্টির প্রতিষ্ঠাদিবস। এককালে এই পদ্মশিবিরের দখলে ছিল ২ টি লোকসভা আসন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, কীভাবে দলের প্রার্থীরা জমানত বাঁচাতে সেই সময় উদ্যোগ নিতেন। সেই দলই ২০১৪ , ২০১৯ লোকসভায় কার্যত বড়সড় রাজনৈতিক সুনামিকে সঙ্গে নিয়ে দেশের শাসনব্যবস্থায় দাপটে প্রবেশ করে। ৩০১ আসন নিয়ে সংসদে প্রবেশ করে মোদী, শাহদের দল। যারা ডাক দিচ্ছে 'কংগ্রেস মুক্ত' ভারতের।
অটলবিহারী বাজপেয়ীর শাসনকালের পর ২০১৪ সাল থেকে নরেন্দ্র মোদীর সরকার বিজেপির সাফল্যের নানান গাথা লিখেছে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠনের যে স্বপ্ন অটলবিহারী বাজপেয়ী দেখেছিলেন, তা সফল হয়েছে মোদী-সুনামির হাত ধরে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক, বিজেপির উত্থানের নেপথ্যে কোন ১০ টি ঘটনা ধীরে ধীরে পোক্ত করেছে গেরুয়া শিবিরের জমি।
-জনতা পার্টি থেকে আলাদা হয়ে ৬ এপ্রিল ১৯৮০ সালে বিজেপির প্রতিষ্ঠা হয়েছে। গেরুয়া শিবির নতুন করে হিন্দুত্বকে গুরুত্ব দিতে শুরু করল। শুরু হল রাম মন্দির আন্দোলন। প্রথম অধ্যক্ষ হলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী।
-বিজেপির আদর্শের সঙ্গে মিলে যায়, জনসংঘের বহু আদর্শ। ১৯৫১ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। প্রদীপ ছিল তার ভোটের চিহ্ন।
-জনসংঘের সময়ে দলের দাপুটে নেতা ছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে যোগ দেন দীনদয়াল মুখোপাধ্যায়। এই দুই নেতার জুটি কার্যত এগিয়ে নিয়ে যায় দলকে। এরপর আসে অটলবিহারী বাজপেয়ী ও লালকৃষ্ণ আদবানীর জুটি। পরবর্তীকালে অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মোদী এই পার্টিকে সাফল্যের নতুন ধাপে তুলে ধরেন।
-১৯৮৪ সালে প্রথমবার ভোটে লড়ে বিজেপি। এই ভোটে মাত্র ২ জন সাংসদ জিতে ছিলেন। উল্লেখ্য, সেই বছরই ইন্দিরা গান্ধীর হত্যা হয়েছিল।
-এরপর আসে লালকৃষ্ণ আদবানির রথযাত্রা। সোমনাথ থেকে অযোধ্যা পর্যন্ত লালকৃষ্ণ আদবানী শুরু করেন রথযাত্রা। সেই সময় পার্টি হিন্দুত্ব তাসে জোর দেয়। পার্টির হিন্দুত্ব নীতি বেশ প্রচার পায়। নিডের ইস্তেহারে বিজেপি রামমন্দির নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে। এরপর ১৯৮৯ সালের ভোটে ২ থেকে ৮৯ টি আসন পায় বিজেপি।
-দেশে ধীরে ধীরে লালকৃষ্ণ আদবানির নেতৃত্বে রাম মন্দির গঠনের আন্দোলন জাগ্রত হতে থাকে। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর দেশে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের অগ্নিগর্ভ সময় উপস্থিত হয়। এর রাজনৈতিক ফল বিজেপি পেয়েছিল। তিন রাজ্য থেকে বিজেপির সরকারকে সরে যেতে হয়।
-১৯৯৬ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি সবচেয়ে বড় পার্টি হিসাবে উঠে আসে। অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার তৈরি হলেও, তা ১৩ দিনের বেশি স্থায়ী হয়নি। ১৯৯৮ সালে বিজেপি ফের সরকারে আসে। সেটি ১৩ মাস টিকে ছিল।
-১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৪ পর্যন্ত বিজেপি ২০ এর বেশি জলের সঙ্গে জোট ধরে রাখে।
-২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বড়সড় ধাক্কা আসতে থাকে বিজেপির রাজনৈতিক সফরে। এই দুটি লোকসভা ভোটে লালকৃষ্ণ আদবানিকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করে সামনে রাখা হয়।
-এরপর আসে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন। প্রথমবার সংসদীয় লড়াইতে নামেন মোদী। বারাণসী তাঁকে উজার করে দেয়। প্রথমবার সাংসদ হয়ে সেই বছরই প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হন তিনি। সাফল্যের রেশ আরও বাড়ে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে। এরপর রয়েছে ২০২৪ সালের ভোট।