বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের এক মূল টার্গেট শেখ হাসিনা। তাই একাধিক দুর্নীতি এবং বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগ তুলে শেখ হাসিনা এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এবার দেড় দশকের পুরনো ঘটনাতেও জড়িয়ে দেওয়া হল শেখ হাসিনার নাম। সুতরাং আবার চাপের কৌশল তৈরি করল মহম্মদ ইউনুস সরকার। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নিযুক্ত কমিশন। সেখানেও জড়িয়ে গিয়েছে শেখ হাসিনা এবং তৎকালীন সেনা জেনারেলের। আর এটাই এখন পদ্মাপারে জোর চর্চার বিষয়বস্তু। যা এখন জানতে পেরেছেন ভারতে থাকা শেখ হাসিনাও।
সালটা ছিল ২০০৯। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিক তখন। ঢাকায় বাংলাদেশ রাইফেলস সদর দফতরের পিলখানায় আধাসেনার বিদ্রোহ দেখা দেয়। আর তার জেরে ৭৪ জন নিহত হয়েছিলেন বলে খবর। ওই ঘটনায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন উন আহমেদ–সহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। দেড় দশকের আগের ঘটনা আবার নতুন করে পদ্মা নদীর জলে ভেসে উঠল। গত ১৯ ডিসেম্বর ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে এই অভিযোগ করা হয়েছিল। তার তদন্ত শুরু হয়েছে। আর ঢাকা এখন শেখ হাসিনাকে ফিরে পেতে চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: আজ থেকে রবিবার রাত পর্যন্ত বন্ধ থাকবে যশোর রোড, বর্ষবরণের প্রাক্কালে কি ভোগান্তি?
শেখ হাসিনাকে ফিরে পেতে ইন্টারপোলের সাহায্য নেওয়া হয়েছে। ভারত সরকারকে প্রত্যপর্ণের জন্য চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। তার মধ্যেই ওই অভিযোগের তদন্ত করতে বাংলাদেশ রাইফেলসের প্রাক্তন ডিজি মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) এএলএম ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের কমিশন গঠন করেছে মহম্মদ ইউনুস সরকার। ‘স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত’ ওই কমিশন এখন কাজ শুরু করে দিয়েছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার ঠিক একমাসের মাথায় ঢাকার পিলখানা ব্যারাকে এই বিদ্রোহ করেছিল বাংলাদেশ রাইফেলস বাহিনী। সেটাই ছড়িয়ে পড়ে কয়েকটি বিডিআর ক্যাম্পে।
২০০৯ সালে পিলখানায় বিডিআরের বা বাংলাদেশ রাইফেলসের বিদ্রোহী জওয়ানরা ৭৪ জনকে হত্যা করেছিল বলে অভিযোগ। যার মধ্যে ৫৭ জনই ছিলেন তৎকালীন বিডিআর প্রধান মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ–সহ ডেপুটেশনে আসা সেনা অফিসার। এই ঘটনায় শিউরে উঠেছিল গোটা বাংলাদেশ। বিদ্রোহী বিডিআর জওয়ানরা সেদিন অফিসারদের মেসে ঢুকে লুটপাট করেছিল বলে অভিযোগ। খুন করা হয় কয়েকজন অফিসারের পরিবারের সদস্যকেও। তারপরই বিডিআরের নাম পরিবর্তন হয়ে বিজিবি অর্থাৎ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ করা হয়েছিল। ওই হত্যাকাণ্ডের মামলায় ১৫২ জনের ফাঁসির সাজা হয়েছিল। আর পরে শেখ হাসিনা এবং তাঁর দল আওয়ামি লিগের কয়েকজন নেতা–মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। যে তদন্ত করে এবার ৯০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে কমিশন।