সম্প্রতি নাকি সেননিবাসে ডেকে নিয়ে গিয়ে হাসনাত আবদুল্লাদের 'ধমক' দেওয়া হয়েছিল। এই আবহে ২১ মার্চ ঢাকার বাংলামোটরে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে কার্যত সেনাবাহিনীকেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির এই নেতা। তাঁর কথায়, ক্যানটমেন্টে সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে, সেটাকে তাঁরা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হিসেবে গণ্য করছেন। এই আবহে হাসনাতের বক্তব্য, 'সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যে আলোচনা আমাদের সঙ্গে হয়েছে, আমরা মনে করি সেটা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। রাজনীতিবিদরাই দেশের পরবর্তী রাজনীতি নির্ধারণ করবে। এরপরে দেশের রাজনীতি কোন দিকে যাবে, সেটি রাজনীতিবিদদের হাতেই থাকা উচিত। তো সে জায়গায় আমরা সন্দিহান বলেই গতকাল আমার স্ট্যাটাস (ফেসবুক পোস্ট) দিতে হয়েছে।' (আরও পড়ুন: ‘ওপারে কি বড় কিছু হবে? ইউনুস চাচার লুঙ্গি নিয়ে নাকি টানাটানি পড়তে চলেছে?’)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে হচ্ছেটা কী? রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে এবার ইউনুসের নিন্দায় সরব নাহিদ ইসলাম
এর আগে গত ২০ মার্চ হাসনাত এক ফেসবুক পোস্ট করে দাবি করেছিলেন, ক্যানটনমেন্টে নাকি সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্তার সঙ্গে সম্প্রতি নাকি বৈঠক করেছিলেন তাঁরা। তাতে নাকি তিনি 'ধমক' খেয়েছেন। ফেসবুকে নিজেই আবার সেই বৈঠকের বিবরণ দেন সেই এনসিপি নেতা। পোস্টে হাসনাত লেখেন, '১১ই মার্চ,সময় দুপুর ২:৩০। কিছুদিন আগে আমি আপনাদের বলেছিলাম যে, 'রিফাইন্ড আওয়ামি লিগ' নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। এই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভারতের। সাবের হোসেন চৌধুরী, শিরিন শারমিন, তাপসকে সামনে রেখে এই পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।' (আরও পড়ুন: আওয়ামি লিগকে ফেরাবে সেনাবাহিনীই? ২৬ মার্চের আগেই খেলা ঘোরার ইঙ্গিত বাংলাদেশে)
আরও পড়ুন: বকেয়া DA মামলার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে, বাংলার সরকারি কর্মীদের মুখে ফুটবে হাসি?
হাসনাত নিজের পোস্টে দাবি করেন, 'আমি সহ আরও দুইজনের কাছে ক্যান্টনমেন্ট থেকে এই পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয় ১১ই মার্চ দুপুর আড়াইটার সময়। আমাদেরকে প্রস্তাব দেওয়া হয় আসন সমঝোতার বিনিময়ে আমরা যেন এই প্রস্তাব মেনে নিই। আমাদেরকে বলা হয়- ইতোমধ্যে একাধিক রাজনৈতিক দলকেও এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে - তারা শর্তসাপেক্ষে আওয়ামি লিগ পুনর্বাসনে রাজি হয়েছে। একটি বিরোধী দল থাকার চেয়ে একটি দুর্বল আওয়ামি লিগসহ একাধিক বিরোধী দল থাকা না-কি ভালো।' এরপর হাসনাত লেখেন, 'ফলশ্রুতিতে আপনি দেখবেন গত দুইদিন মিডিয়াতে আওয়ামি লিগের পক্ষে একাধিক রাজনীতিবিদ বয়ান দেওয়া শুরু করেছে। আমাদেরকে আরো বলা হয়-রিফাইন্ড আওয়ামি লিগ যাদের দিয়ে করা হবে, তারা এপ্রিল-মে থেকে শেখ পরিবারের অপরাধ স্বীকার করবে, হাসিনাকে অস্বীকার করবে এবং তারা বঙ্গবন্ধুর আওয়ামি লিগ করবে এমন প্রতিশ্রুতি নিয়ে জনগণের সামনে হাজির হবে।' (আরও পড়ুন: ট্রুডো জমানায় ভারত-কানাডা সম্পর্ক ঠেকে তলানিতে, নয়া PM মার্ককে কী বার্তা ভারতের)
আরও পড়ুন: 'ওরা মদে আসক্ত', হিন্দুদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য AAP বিধায়কের, উঠল বিক্ষোভের ঝড়
হাসনাতের পোস্টে আরও লেখা হয়, 'আমাদেরকে এই প্রস্তাব দেওয়া হলে আমরা তৎক্ষণাৎ এর বিরোধিতা করি এবং জানাই যে, আওয়ামি লিগের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে আওয়ামি লিগের বিচার নিয়ে কাজ করুন। এর উত্তরে আমাদের বলা হয়, আওয়ামি লিগকে ফিরতে কোন ধরণের বাধা দিলে দেশে যে সংকট সৃষ্টি হবে, তার দায়ভার আমাদের নিতে হবে এবং 'আওয়ামি লিগ মাস্ট কাম ব্যাক'। আলোচনার এক পর্যায় বলি-যেই দল এখনও ক্ষমা চায়নি, অপরাধ স্বীকার করে নাই,সেই দলকে আপনারা কিভাবে ক্ষমা করে দিবেন! অপরপক্ষ থেকে রেগে গিয়ে উত্তর আসে, 'ইউ পিপল নো নাথিং। ইউ ল্যাক উইজডোম অ্যান্ড এক্সপিরিয়েন্স। উই আর ইন দিজ সার্ভিস ফর অ্যাটলিস্ট ফোর্টি ইয়ার্স। তোমার বয়সের থেকে বেশি। তাছাড়া আওয়ামি লিগ ছাড়া 'ইনক্লুসিভ' ইলেকশন হবে না। উত্তরে বলি, ' আওয়ামি লিগের সাথে কোনও ইনক্লুসিভিটি হতে পারে না। আওয়ামি লিগকে ফেরাতে হলে আমাদের লাশের উপর দিয়ে ফেরাতে হবে। আওয়ামি লিগ ফেরানোর চেষ্টা করা হলে যে সংকট তৈরি হবে, তার দায়ভার আপনাদের নিতে হবে'। পরে- মিটিং অসমাপ্ত রেখেই আমাদের চলে আসতে হয়।'