মন্দির-মসজিদ নিয়ে হাজারো বিতর্কের মধ্য়েই উত্তরপ্রদেশের দু'টি জায়গায় খনন শুরু করলেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। দাবি করা হচ্ছে, ওই দুই স্থানেই নাকি 'প্রাচীনকালের মন্দির' থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, একটি দক্ষিণপন্থী হিন্দু সংগঠনের দাবি মেনে এইসব খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। সেই কর্মকাণ্ড যাতে ঠিকভাবে হয়, তা দেখভালের দায়িত্বে ছিল স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন।
পুলিশ সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, এই দু'টি স্থানের মধ্য়ে একটি রয়েছে রসুলপুর থানার অন্তর্গত কাশ্মীরি গেট এলাকায়। সেই স্থানের কাছেই রয়েছে মহম্মদী মসজিদ। দু'দিন আগেই নাকি সেখানে প্রাচীনকালে মন্দির থাকার একটা সম্ভাবনার খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তাই সেই সম্ভাবনা যাচাই করে দেখা হচ্ছে।
পুলিশের আরও দাবি, এই বিষয়টি নিয়ে এলাকায় কোনও অশান্তি বা উত্তেজনা হয়নি। কারণ, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
রসুলপুর থানার স্টেশন অফিসার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট হিন্দু সংগঠনের তরফ থেকে এলাকায় খননকার্য শুরু করার দাবি ওঠে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের তরফে স্থানীয় মুসলিম সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলা হয়।
এরপর দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসে পুলিশ। অবশেষে সকলের সহমত নিয়েই শান্তিপূর্ণভাবে ওই এলাকায় খননকার্য শুরু করা হয়।
খননকার্য যেখানে চলছে, সেই স্থানে আগাগোড়া উপস্থিত থেকেছেন বজরং দলের জেলা প্রধান মোহন বজরঙ্গি। তাঁর দাবি, ওই এলাকায় একটি শিব মন্দিরের কাঠামো পাওয়া গিয়েছে। তিনি বলেন, 'একবার খননকার্য শেষ হয়ে গেলেই মন্দিরের গঠন ও বিগ্রহ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে কিছু বলা সম্ভব হবে।'
আকিল আহমেদ নামে এলাকার এক বাসিন্দা জানান, এক সময় এই জমিতে চাষাবাদ করা হত। সম্ভবত, কোনও হিন্দু পরিবারই এই জমির মালিক ছিল সেই সময়।
কিন্তু, ক্রমে এই এলাকায় মুসলমানদের সংখ্য়া বাড়তে থাকে। ফলত, হিন্দু পরিবারগুলি এই এলাকা ছেড়ে চলে যায়। সে প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা।
'প্রাচীন মন্দির আবিষ্কারের' আরও একটি ঘটনা ঘটেছে বলেও দাবি করা হচ্ছে। সেটি ঘটেছে গত সোমবার সন্ধেয়। রামগড় থানার অন্তর্গত চিস্তি নগর ৬০ ফুট রোড এলাকায় পুরোনো মন্দির পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি উঠেছে।
স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধি এবং মুসলমান বাসিন্দাদের উপস্থিতিতেই এই স্থানটি পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন করেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ফিরোজাবাদ ইউনিটের সভাপতি রাজীব শর্মা ও তাঁর অনুগামীরা।
স্থানীয় মহকুমাশাসক সঞ্জীব দুবে জানিয়েছেন, প্রায় ৫০ বছর আগে এখানে হিন্দুদের সংখ্য়া বেশি ছিল। এবং সেই সময় এখানে একটি মন্দির ছিল।
তিনি বলেন, 'এখন এখানে মুসলমানদের সংখ্য়া বেশি। খননকার্য চলছে। এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুণ্ণ রয়েছে।'