
Betvisa
6.88% Weekly Cashback on 2025 IPL Sports
স্ত্রী 'পর্দাপ্রথা' মানেননি বলে তাঁর বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতন চালানো বা নৃশংসতার অভিযোগ আনা যায় না। কেবলমাত্র এই কারণে স্ত্রীকে ডিভোর্সও দেওয়া যায় না। একটি মামলা প্রসঙ্গে এই পর্যবেক্ষণ করেছে উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদ হাইকোর্ট।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট মামলায় এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে এই ইস্যুতে ডিভোর্সের মামলা রুজু করলেও এর আগে নিম্ন আদালত তা খারিজ করে দেয়। এরপর এলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই ব্যক্তি। নিম্ন আদালতের রায় চ্যালেঞ্জ করে স্ত্রীর বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ আনেন তিনি। এবং স্ত্রীর থেকে আইনত বিচ্ছেদ চান।
সেই মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে বিচারপতি সৌমিত্র দয়াল সিং এবং বিচারপতি দোনাদি রমেশের বেঞ্চে। বিচারপতি সিংয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ স্পষ্ট জানায়, এখানে আবেদনকারী দাবি করেছেন, তাঁর স্ত্রী ব্যাভীচারী এবং তিনি তাঁর স্বামীর উপর মানসিক নির্যাতন চালিয়েছেন! কারণ, তিনি যখন বাড়ির বাইরে যেতেন, বা বাজার করতেন, তখন তিনি হিজাব পরতেন না, পর্দাপ্রথা মানতেন না। কিন্তু, এই আচরণের জন্য কখনই তাঁর বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ আনা যায় না।
আদালত বলে, একজন মহিলা বা ব্যক্তি, যিনি পর্দাপ্রথা মানেন না, তিনি বিভিন্ন জায়গায় যাবেন, অথবা নাগরিক সমাজে অন্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন, এবং সেটা করতে গিয়ে তিনি যদি কোনও বেআইনি কাজ না করেন, কোনও অনৈতিক সম্পর্কে না জড়ান, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে মোটেও অত্যাচার বা নৃশংসতার অভিযোগ আনা যায় না।
এই অভিযোগের ধরন নিয়ে আদালত আরও বেশি করে বিস্ময় প্রকাশ করেছে, কারণ - এই মামলায় মামলাকারী এবং অভিযুক্ত - দু'জনই উচ্চ শিক্ষিত। সংশ্লিষ্ট মামলাকারী পুরুষটি একজন ইঞ্জিনিয়র এবং তাঁর স্ত্রী সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকা।
আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ হল, বিভিন্ন মানুষের জীবন দর্শন আলাদা। ফলত, তাঁদের আচরণও আলাদা। এই প্রেক্ষাপটে এক পক্ষ অন্য পক্ষের জীবন দর্শনকে নৃশংস বলে দেগে দিতেই পারে। কিন্তু,তাহলেই সেটা প্রমাণিত সত্যি হয়ে যায় না। সেটা যে অপরাধ বা নৃশংসতা, সেটা আইন অনুসারে প্রমাণিত হতে হবে।
এই মামলায় পরিবার আদালতের অবস্থানেই সায় দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। পরিবার আদালত এর আগে এই মামলা খারিজ করে দিয়েছিল। নিম্ন আদালতের সেই পদক্ষেপ সঠিক ছিল বলেই জানিয়েছে উচ্চ আদালত। কারণ, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে অত্যাচার ও নৃশংসতার অভিযোগ আনলেও, কেন তিনি সেই অভিযোগ করছেন, তার স্বপক্ষে যুৎসই তথ্য ও প্রমাণ পেশ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
এই মামলায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আরও দাবি করেছেন, তাঁর স্ত্রী কোনও এক 'পঞ্জাবী বাবা'র সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। কিন্তু, এই অভিযোগের স্বপক্ষেও কোনও প্রমাণ পেশ করতে পারেননি।
তবে, আদালত এও স্পষ্ট করেছে, ওই ব্যক্তি চাইলে অন্য যুক্তিতে স্ত্রীর বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করতে পারেন। যেমন - স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে তাঁর থেকে দূরে থাকছেন, তাঁর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে অস্বীকার করছেন ইত্যাদি। কারণ, বৈবাহিক প্রতিষ্ঠানে এগুলি অন্তরায় সৃষ্টি করে।
আদালত তার পর্যবেক্ষণে আরও জানিয়েছে, এই ঘটনায় স্ত্রী যেমন তাঁর স্বামীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহ দেখানি, তেমনই তাঁদের বৈবাহিক সম্পর্কের দূরত্ব ঘোচাতেও কোনও পদক্ষেপ করেননি।
এরই প্রেক্ষিতে এলাহাবাদ আদালত বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন মঞ্জুর করেছে। এবং জানিয়েছে, এই মামলায় দুই পক্ষই আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী। তাঁদের একমাত্র ছেলের বয়স ২৯ বছর। তাই কোনও পক্ষ সেই সন্তানের কাস্টডি চায়নি। যদিও তিনি তাঁর মায়ের সঙ্গেই থাকেন। এই মামলায় কোনও পক্ষ ভরণপোষণের খরচও চায়নি।
6.88% Weekly Cashback on 2025 IPL Sports