আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল ইরাকের করোনা হাসপাতাল। তীব্র বিস্ফারণে কেঁপে উঠল গোটা হাসপাতাল এলাকা। বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৮২ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে ইরাকের মন্ত্রক। রবিবার মধ্যরাতে ঘটনাটি ঘটেছে ইরাকের বাগদাদ শহরের ইবনে আল-খতিব হাসপাতালে। ঘটনায় হাসপাতালের ‘ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট’-তে (আইসিইউ) আগুন লেগে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এরপর আচমকাই তীব্র বিস্ফোরণ ঘটে যায়।হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ৩০ জন রোগী শয্যাশায়ী ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ডজনখানেক পরিবারের লোকজনও। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাসপাতালে গুদামে অক্সিজেন সিলিন্ডার ট্যাঙ্কের ত্রুটির কারণে এই আগুন লেগে গিয়েছে। ঘটনার সময় বাগদাদের এই গুরুত্বপূর্ণ করোনা হাসপাতালে আচমকাই বিস্ফোরণের আওয়াজে কেঁপে উঠে। তার জেরে হাসপাতালে একাধিক তলায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এর পর দৌড়োদৌড়ি শুরু করে দেন রোগী ও তাঁদের আত্মীয়রা। তাঁরা ওই হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু হাসপাতাল থেকে তড়িঘড়ি বেরতে গিয়ে অনেকেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। এই ঘটনা প্রসঙ্গে, ইরাকের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে তারা ১২০ জন রোগীর মধ্যে থেকে ৯০ জন ও তাদের আত্মীয়দের উদ্ধার করেছে। তবে নিহত-আহতদের সঠিক তথ্য জানাতে পারেনি তারা।বাগদাদের রাজ্যপাল মোহাম্মদ জাবের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে ঘটনায় তদন্ত কমিশন গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। ওদিকে ঘটনায় নাগরিক প্রতিরক্ষা কমিটি জানিয়েছে যে, আগুন নিয়ন্ত্রণেই ছিল। কিন্তু এই ঘটনায় কতজন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন কিংবা আহত হয়েছেন, সে বিষয়ে কোনও বিবৃতি স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফ থেকে পাওয়া যায়নি। এই ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তারপরই হইচই বেঁধে যায় গোটা দেশে। এই ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে যে, দমকলকর্মীরা ইরাকের রাজধানী বাগদাদের দক্ষিণ পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত ওই হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন।প্রসঙ্গত, জরাজীর্ণ স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর এই দেশ এখন মারণ ভাইরাসের কবলে চলে গিয়েছে। দশকের পর দশক ধরে ইরাকের হাসপাতালগুলি দুর্বল পরিকাঠামো এবং শয্যার ঘাটতিতে ভুগছে। এদিন ইরাকে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ১০ কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে, যা আরব রাজ্যগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি।