মহিলা কর্মচারীদের ঋতুকালীন ছুটি দেবে সিকিম হাইকোর্ট। ২৭ মে একটি বিজ্ঞপ্তিতে, সিকিম হাইকোর্ট বলেছে যে মহিলা কর্মীরা মাসে দুই থেকে তিন দিনের জন্য ঋতুকালীন ছুটি নিতে পারেন। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারের অনুমোদন পাওয়ার পর মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
এর ফলে হাইকোর্ট রেজিস্ট্রির মহিলা কর্মচারীরা এখন থেকে মাসে দুই থেকে তিন দিন মাসিক ছুটি নিতে পারবেন। তবে, তাঁদের প্রথমে হাইকোর্টের সঙ্গে সংযুক্ত মেডিক্যাল অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এর পরে, এই ধরনের ছুটির জন্য একটি সুপারিশপত্র পেতে হবে। তার পরেই একমাত্র ছুটি মঞ্জুর করা হবে। বিজ্ঞপ্তিতে এও বলা হয়েছে যে, 'এ ধরনের ছুটি নিলে আপনার মোট ছুটির তালিকায় কোনও প্রভাব পড়বে না।'
- হঠাৎই এমন সিদ্ধান্ত কেন
মহিলাদের ঋতুকালীন সময়ে শারীরিক ক্লান্তি ও মানসিক ক্লান্তি কাজ করে। কাজও তাই দক্ষ ভাবে হয়ে ওঠে না। এছাড়াও প্রতিমাসে মহিলাদের মধ্যে এই সময়ের দুই তিন দিন ছুটি নেওয়ার প্রবণতাও দেখা যায়। ২০২২ সালের 'রাইট অফ উইম্যান মেনস্ট্রুয়াল লিভ অ্যান্ড ফ্রি অ্যাক্সেস টু মেনস্ট্রয়াল হেলথ প্রোডাক্ট' বিল সেভাবে মহিলাদের সাহায্য না করলেও, সিকিমের পাশাপাশি দেশে বিহার এবং কেরালা সরকার মহিলা কর্মীদের জন্য প্রতিমাসে ঋতুকালীন ছুটির ব্যবস্থা করেছে।
বর্তমানে, মাসিক ছুটির জন্য কোনও জাতীয় নীতি বা আইন নেই। তা সত্ত্বেও, দেশের সবচেয়ে ছোট হাইকোর্ট, সিকিম হাইকোর্ট হল প্রথম হাইকোর্ট, যেটি মহিলাদের মাসিক ছুটির নীতি চালু করেছে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে, সুপ্রিম কোর্ট দেশের ছাত্রছাত্রী এবং কর্মজীবী মহিলাদের জন্য মাসিক ছুটির আবেদনের শুনানি করতে অস্বীকার করেছিল। কারণ হিসাবে আদালত সাফাই দিয়েছিল যে এটি নীতির জন্য প্রযোজ্য এবং এটি আদালতের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় নয়। তাই তখন ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ সুপারিশ করেছিল যে এই মাসিক ছুটি লাগলে কেন্দ্রীয় মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে একটি আপিল করতে হবে।
এরপর সেই অনুযায়ী এগিয়ে কোনও লাভ হয়নি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে, নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি মাসিক ছুটি নীতির বিরোধিতা করেছিলেন। যদিও ইরানি বলেছিলেন যে তিনি বিশ্বাস করেন যে ঋতুস্রাব এবং ঋতুচক্র কোনও বাধা নয়। সেই বছরের একই মাসে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক একটি খসড়া মাসিক স্বাস্থ্যবিধি নীতি প্রণয়ন করেছিল, যাতে বলা হয়েছিল যে মহিলাদের এই সময় বাড়ি থেকে কাজ বা ছুটি দেওয়া উচিত, যাতে তাঁদের প্রতি কোনও বৈষম্য না হয়।
উল্লেখ্য সিকিম বরাবরই সামাজিক স্বচ্ছতার দিক থেকে অনেক এগিয়ে। সিকিম এমনই একটি ছোট হিমালয়ান রাজ্য, যা ছাত্রীদের স্বাস্থ্য এবং পরিচ্ছন্নতার উন্নতিতে অগ্রণী ভূমিকা নেই। এছাড়াও, এটি মায়েদের ক্ষমতায়ন এবং আইভিএফ-এর মাধ্যমে দম্পতিদের সন্তান ধারণেও সহায়তা করেছিল।