
Betvisa
6.88% Weekly Cashback on 2025 IPL Sports
নির্মাল্য দত্ত
পুরনো দিনে সিনেমার ট্রেলারগুলোতে কথা দেওয়া হয়তো যে তারা সেই ছবিতে সমস্ত ধরনের জিনিসকে রেখেছেন, যেমন নাটকীয়তা, প্রেম, রোম্যান্স, দূরত্ব, মারপিট, ইত্যাদি তেমনই যদি কোনও খাবারের নাম বলতে বলা হয় যাতে এগুলো সব আছে তাহলে সেটা হবে রাসবিহারী বসুর নাকামুরায়ার ইন্ডি কারি। হ্যাঁ, রাসবিহারী বসু হলেন তিনি, যিনি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর হাতে আইএনএর দায়িত্ব ভার তুলে দেন। কিন্তু তার আগে তিনি যেটা করেছিলেন, সেটা হল একটা দুর্ধর্ষ রান্না বানিয়েছিলেন জাপানি এবং ভারতীয় উপকরণ মিশিয়ে।
১৮৮৬ সালে জন্মেছিলেন তিনি। তারপর ব্রিটিশ রাজের অফিসিয়ার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। কিন্তু একটা সময় প্রতিবাদে সামিল হন যখন বাংলা দেশ ভাগ নিয়ে গর্জে উঠেছিল ১৯০৫ সালে। ১৯১২ সালে ভারতের ভাইসরয়কে হত্যার চেষ্টা করেই জাপানে পালিয়ে যান ১৯১৫ সালে। নিজেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আত্মীয় পিএস ঠাকুর বলে পরিচয় দেন তিনি। এরপর তিনি প্রথমে কোবেতে, যান সেখান থেকে টোকিও। এই জায়গাগুলোতে তিনি প্যান-এশীয়দের মধ্যে ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাব জাগিয়ে তুলেছিলেন।
সেখানে গিয়ে রাসবিহারী একাধিক নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, যাঁদের মধ্যে ছিলেন মিৎসুরু তোয়ামা। তোয়ামা তখন তাঁর সঙ্গে সোমা পরিবারের আলাপ করান যাঁরা একটি বিখ্যাত বেকারি ছিল। সেই বেকারির নাম হচ্ছে নাকামুরায়া। আর তারপরই তিনি সোমা পরিবারের বড় মেয়ে তোশিকোর প্রেমে পড়েন এবং বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, এই ঘটনাটি রাসবিহারীকে জাপানি নাগরিকত্ব পেতে ভীষণই সাহায্য করে। ১৯২৫ সালে তোশিকো মারা যান দুই সন্তান রেখে।
এরপর তিনি ১৯২৭ সালে শ্বশুরের সঙ্গে মিলে বানান নাকামুরায়ার ইন্ডি কারি, যাতে ভরপুর বাংলার স্বাদ ছিল। এটা আদতে মাংসের পাতলা ঝোল। এই রান্নাটিতে আলুর সঙ্গে অথবা শুধু মাত্র ঘন ঝোলের চিকেন কারি যাতে আদা পেঁয়াজ ব্যবহার করে দারুন একটা স্বাদ তৈরি করা হতো। এটা পেটের জন্য উপকারী। এছাড়া দই আর তেঁতুল দেওয়া হতো এই রান্নায় যা একটা অন্য টেস্টের সঙ্গে হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করত। এই রান্নাটি জাপানিদের দারুন পছন্দ হয় কারণ এতে ঠিকঠাক পরিমাণে মশলা দেওয়া হতো, যা স্বাস্থ্য এবং পেট দুই ভালো রাখতো।
অন্যদিকে অনেকেই এটা মনে করে থাকেন যে এই রান্নার মধ্যে দিয়েও রাসবিহারী ব্রিটিশ বিরোধী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন, যেখানে তিনি ব্রিটিশদের খাবারের পরিবর্তে ভারতীয় খাবার বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন। ভারতীয় খাবারকে তার জায়গা ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন।
যদিও রাসবিহারী বসু দেশকে স্বাধীন দেখে যেতে পারেননি, তবুও তাঁর এই অসাধারণ রান্না যাঁরা খেয়েছিলেন প্রত্যেকের মুখে লেগে রয়েছে।
১৯৪৩ সালে সিঙ্গাপুরের একটি মিটিংয়ে আইএনএর দায়িত্ব তিনি নেতাজির হাতে তুলে দেন এবং সেখানে তিনি জানান প্রেসিডেন্ট পদ থেকে তিনি সরে দাঁড়াচ্ছেন তাঁর জায়গায় দিয়ে যাচ্ছেন ভারত মায়ের অন্যতম কৃতি সন্তানকে। এখন থেকে নেতাজি হবে তাঁদের নেতা।
6.88% Weekly Cashback on 2025 IPL Sports