মহালয়া থেকে যতই মানুষ ঠাকুর দেখতে বের হোক না কেন, দুর্গাপুজো শুরু হয় ষষ্ঠী থেকে। দেবীর বোধন থেকে শুরু হয় মায়ের আরাধনা আর বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হয় দুর্গাপুজো। কিন্তু আপনি কি জানেন, কেন মা দুর্গাকে বোধন করা হয় পুজো করার আগে?
শাস্ত্র মতে, শরৎকাল হল যে কোনও দেবদেবীর নিদ্রাকাল। পৃথিবীর এক বছরের সমান স্বর্গের একদিন তাই সূর্যের উত্তরায়নকে বলা হয় দেবতাদের দিন এবং দক্ষিণায়নকে বলা হয় দেবতাদের রাত্রি কাল। বলা ভালো, সূর্যের এই উত্তরায়ণ চলে ৬ মাস এবং দক্ষিণায়ন চলে ৬ মাস।
(আরও পড়ুন: লাস ভেগাসের স্ফিয়ারের বিশেষত্ব কী? কীসের চমক সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে?)
মনে করা হয়, উত্তরায়ণের সময় সমস্ত দেব-দেবী জাগ্রত অবস্থায় থাকেন তাই সেই সময় পুজো করা হয় সব দেবদেবীর। কিন্তু দক্ষিণায়নের সময় নিদ্রায় মগ্ন থাকেন দেব-দেবী আর শরৎকালে চলে সেই দক্ষিণায়ন। যেহেতু ভগবান শ্রী রাম অকালে মা দুর্গাকে পুজো করেছিলেন তাই দেবীকে পুজো করার আগেই বোধন করে দেবীর নিদ্রা ভঙ্গ করেছিলেন ভগবান শ্রী রাম।
পুরাণ অনুযায়ী, রামচন্দ্রের আগে রাজশ্রী সুরথ প্রথম আদ্যাশক্তি মহামায়ার পুজো করেছিলেন। সেই পুজোকে বলা হয় বাসন্তী পুজো। মনে করা হয় বাসন্তী পুজোই হলো দেবীর আসল পুজো। অকালে মায়ের বোধন করে রামচন্দ্র শরৎকালে শুরু করেছিলেন দুর্গাপুজো।
(আরও পড়ুন: জ্যাম এড়িয়ে ঠাকুর দেখার প্ল্যান? রইল কলকাতার তিন মেট্রোপথের সম্পূর্ণ গাইড)
দেবীকে নিদ্রা থেকে জাগিয়ে এই পুজো করার এই পদ্ধতিকেই বলা হয় ‘বোধন’। যেহেতু শরৎকালে অর্থাৎ দক্ষিণায়নের সময় দেবী দুর্গার নিদ্রা ভঙ্গ করা হয়েছিল অকালে তাই এই বোধনকে ‘অকাল বোধন’ বলা হয়। অকাল বোধনের পর মায়ের অধিবাস এবং আমন্ত্রণ করা হয় তারপর শুরু হয় পুজো।
চলতি বছর ৯ অক্টোবর হবে ষষ্ঠী পুজো, যদিও তিথি অনুযায়ী তার আগের দিনই শুরু হয়ে যাবে ষষ্ঠী পুজোর রীতি। মায়ের বোধন করার পর একে একে চলবে পুজোর রীতি। অবশেষে দশমীর দিন বেজে উঠবে বিদায়ের সুর।