আফ্রিকা মানেই জঙ্গল, জঙ্গল মানেই জন্তু— এমন কোনও ধারণা নিয়ে এই মহাদেশে পৌঁছোননি লেখক। বরং প্রকৃতির মধ্যে দিয়ে যাত্রা করলেও আসলে বেবাক প্রকৃতি থেকে তিনি শত হস্ত দূরে। আর অন্য প্রাণীকূল নিয়ে তাঁর বিশেষ মাথাব্যথা আছে বলেও কখনও মনে হয়নি। বরং তিনি অনেক বেশি করে মানুষের কাছাকাছি থাকতে চেয়েছেন তাঁর যাত্রাপথে। অনেক বেশি করে সন্ধান করেছেন মানুষের ইতিহাসের। ছুঁতে চেয়েছেন নৃতত্ত্বের টেক্সট বুক।

২০১২ সালে সাইকেল নিয়ে আফ্রিকা মহাদেশের পাঁচটি দেশ পাড়ি দেন অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়। সংখ্যায় পাঁচটি দেশ হলেও আসলে প্রায় অর্ধেক মহাদেশ। বিষুব রেখা থেকে মকরক্রান্তি রেখা পর্যন্ত সাইকেলে যাত্রা। এবং পথমধ্যে বারবার বিভিন্ন মূলবাসী মানুষের সঙ্গ, তাঁদের জীবনে মিলেমিশে যাওয়া।
এই গোটা অভিজ্ঞতার কথাই অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায় নথিবদ্ধ করেছেন ‘অতএব আফ্রিকা’ বইয়ে। ২০১৬ সালে প্রথম প্রকাশিত হলেও এ বছর আবার নতুন করে গ্রন্থিত হয়েছে বইটি।
_1646809488166.jpg)
কেন এই বই বাঙালির আপন হয়ে উঠতে পারে?
যাঁরা দু’মলাটের ভিতর আজও অ্যাডভেঞ্চারের স্বপ্ন দেখেন, যাঁরা আজও মনে করেন, পৃথিবীর সবটা আবিষ্কার হয়ে যায়নি, মানচিত্রের সবটা পূরণ হয়ে যায়নি— সেই সব বাঙালিদের জন্য এই বই কিছুটা ভাবনার রসদ জোগাতেই পারে। নাগালের মধ্যে ফিরিয়ে দিতে পারে শঙ্কর, অপুদের। তাঁদের কানে সাইকেলের চেনের শব্দে বেজে উঠতেই পারে সোনাটা। সেখানেই ‘অতএব আফ্রিকার’ কৃতিত্ব।