চণ্ডীগড়ের নামী স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান পোস্টগ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (PGIMER)-এ সার্ভিকাল ক্যানসার প্রতিরোধে HPV ভ্যাকসিন নেওয়ার হার একেবারেই আশানুরূপ নয়। দীর্ঘদিন ধরে প্রচারণা ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ সত্ত্বেও, ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে মাত্র ৬৩ জন গত বছর এই ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সচেতনতার অভাব, সমাজে যৌন স্বাস্থ্য নিয়ে সংকোচ ও ভ্যাকসিনের উচ্চমূল্য এর পিছনে মূল কারণ। যদিও দেশে তৈরি 'সার্ভাভ্যাক' ভ্যাকসিনের মূল্য তুলনামূলকভাবে কম (প্রতি ডোজ ১,৫০০ থেকে ২,০০০ টাকা), তবুও এটি অনেক নারীর সাধ্যের বাইরে। অপরদিকে, বিদেশি ভ্যাকসিনগুলোর দাম নগদ ৪,০০০ থেকে ৯,০০০ পর্যন্ত হওয়ায় এগুলি আরোই সাধ্যাতীত।
HPV কী? কীভাবে এটি ছড়িয়ে পড়ে?
HPV (হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস) একটি যৌনবাহিত সংক্রমণ, যা সার্ভিকাল ক্যানসারের প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অফ পেডিয়াট্রিকস ৯-১৪ বছর বয়সীদের ভ্যাকসিন দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে, যাতে প্রথম যৌনসম্পর্ক স্থাপনের আগেই শরীরে প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে ওঠে।
ভারতে প্রতি আট মিনিটে একজন নারী সার্ভিকাল ক্যানসারে মারা যান। অথচ এই ক্যান্সার প্রতিরোধযোগ্য। ঠিক সময়ে HPV ভ্যাকসিন গ্রহণ করলে এই রোগ এড়ানো সম্ভব। তবে স্বাস্থ্যব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা ও জনসচেতনতার অভাবে অনেক নারী এখনও এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, HPV ভ্যাকসিনকে জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হলে এর গ্রহণযোগ্যতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। পাশাপাশি স্কুল এবং কলেজ পর্যায়ে সচেতনতা কর্মসূচি চালু করে কিশোরী মেয়েদের ও তাদের অভিভাবকদের ভ্যাকসিনের গুরুত্ব বোঝানো প্রয়োজন।
সমাজের মধ্যে যৌন স্বাস্থ্য বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা এবং সরকারি সহযোগিতার মাধ্যমে HPV ভ্যাকসিনের ব্যাপকতা বাড়ানো সম্ভব। ভ্যাকসিন গ্রহণের হার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি, ভ্যাকসিনের খরচ কমানো এবং জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি গ্রহণ নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।